আন্তর্জাতিক

ধেয়ে আসছে অত্যন্ত বিপজ্জনক ও বিরল হারিকেন 'বেরিল'

ঘূর্ণিঝড় ‘বেরিল’ আরও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। এরইমধ্যে ক্যাটাগরি ৪-এ পৌঁছানো ঘূর্ণিঝড়টিকে ‘অত্যন্ত বিপজ্জনক’ বলে অভিহিত করেছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ মাত্র ৪২ ঘণ্টার মধ্যে এটি প্রবল আকার ধারণ করেছে। ধারণা করা হচ্ছে, ক্যারিবীয় অঞ্চলে ঘণ্টায় ১৭৯-২০৯ কিলোমিটার বাতাসের গতিবেগ নিয়ে তাণ্ডব চালাতে পারে।

রোববার (০১ জুলাই) সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এর প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় বেরিল ইতিমধ্যে দক্ষিণ-পূর্ব ক্যারিবীয় অঞ্চলের কাছে পৌঁছে গেছে এবং স্থানীয়দের নিরাপদে আশ্রয় নেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে

কলোরাডো স্টেট ইউনিভার্সিটির ঘূর্ণিঝড়-বিষয়ক গবেষক ফিলিপ ক্লটজবাচের মতে, স্থানীয় সময় রোববার সকালে ক্যাটাগরি ৩ হারিকেনে রূপ নিয়ে ‘রেকর্ড’ (জুন মাসে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের হিসেবে) গড়ে বেরিল।

স্যাম লিলো নামে আরেক বিশেষজ্ঞের মতে, গ্রীষ্মমন্ডলীয় নিম্নচাপ থেকে বড় ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে বেরিলের লেগেছে মাত্র ৪২ ঘণ্টা। আর আটলান্টিক মহাসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের ইতিহাসে এর আগে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে মাত্রা ছয়বার।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন বলছে, ‘বেরিল’ এখন পর্যন্ত আটলান্টিক মহাসাগরে রেকর্ড করা প্রথম এবং জুনমাসে রেকর্ড করা একমাত্র ক্যাটাগরি ৪ হারিকেন।

হারিকেন এবং ঝড়-জলোচ্ছ্বাস বিশেষজ্ঞ মাইকেল লোরির মতে, ‘বেরিল এই অঞ্চলে বছরের এই সময়ের জন্য একটি অত্যন্ত বিপজ্জনক এবং বিরল হারিকেন। আঘাত হানার আগেই এটি ঐতিহাসিক হয়ে উঠেছে।’

ঘূর্ণিঝড় বেরিল রোববার রাত কিংবা সোমবার (১ জুলাই) ভোরে ক্যারিবীয় উইন্ডওয়ার্ড উইন্ডওয়ার্ড দ্বীপপুঞ্জে ভয়াবহ তাণ্ডব চালাতে পারে বলে সতর্ক করেছে ইউএস ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার (এনএইচসি)।

ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলের কাছাকাছি বড় এবং ধ্বংসাত্মক ঢেউ নিয়ে আসতে পারে উল্লেখ করে এনএইচসি বলছে, ঘূর্ণিঝড় সতর্কীকরণ এলাকায় যেখানে মূল অংশটি আছড়ে পড়তে পারে, সেখানে এবং তার কাছাকাছি উপকূলীয় অঞ্চলে ৬ থেকে ৯ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফিয়ারিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টারের ডিরেক্টর মাইক ব্রেনান সিএনএনকে বলেন, আমরা দ্রুত তীব্রতা (ঝড়ের) বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিচ্ছি এবং বার্বাডোস ও উইন্ডওয়ার্ড দ্বীপপুঞ্জের মতো জায়গায় পৌঁছানোর আগে বেরিল একটি বড় হারিকেন হয়ে উঠবে। এছাড়া পূর্ব ও মধ্য ক্যারিবীয় অঞ্চলে অগ্রসর হওয়ার পরও এটি শক্তিশালী থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কতাসহ স্থানীয় বাসিন্দাদের ঝড়ের ‘বড় প্রভাবের’ জন্য প্রস্তুত থাকার পরামর্শও দিয়েছেন ব্রেনান।

বার্বাডোস, সেন্ট লুসিয়া, সেন্ট ভিনসেন্ট এবং গ্রেনাডাইন দ্বীপপুঞ্জ, গ্রেনাডা ও টোবাগোতে হারিকেন সতর্কতা জারি রয়েছে।

কেএস/

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন