আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

ইসি কোনো এজেন্ডা বাস্তবায়নে মাতামাতি করছে: জিএম কাদের

সংলাপে প্রায় সব রাজনৈতিক দল ইভিএমের বিরোধিতা করেছে, কিন্তু নির্বাচন কমিশন ইভিএমে ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নির্বাচন কমিশন (ইসি) যেন সাজানো নির্বাচন করতে পাঁয়তারা চালাচ্ছে। বললেন জাতীয় পার্টি (জাপা) চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ 

আজ বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাপা চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, দেশের বেশিরভাগ মানুষ মনে করে ইভিএম হচ্ছে কারচুপির মেশিন। নির্বাচন কমিশন সম্প্রতি বলছে, সবদলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা তাদের দায়িত্ব নয়। নির্বাচন কমিশন একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে পারবে- তাতে অনেকেরই সন্দেহ আছে। মনে হচ্ছে, নির্বাচন কমিশন কোনো এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে মাতামাতি করছে।

জিএম কাদের বলেন, দেশের মানুষ কথা বলতে পারছে না। কোনো দাবিতে আন্দোলন হলে পুলিশ ও প্রতিপক্ষ তাতে হামলা চালাচ্ছে। মনে হচ্ছে এমন বাস্তবতায় নির্বাচন হলে লেভেল প্লেইং ফিল্ড হবে না। যেখানে সরকারের ৯০ শতাংশ প্রভাব রয়েছে, পুলিশ ও প্রশাসন সকারের হাতে, এমন বাস্তবতায় সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করা যায় না।

তিনি বলেন, জাতীয় পার্টিতে কোনো সংকট নেই। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রতিপক্ষ হিসেবে জাতীয় পার্টিকে বারবার ক্ষতি করতে চেয়েছে। যারা পার্টি ছেড়ে গেছেন তারা কেউ শক্তিশালী সংগঠক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারেননি। এভাবে কেউ চলে গেলেও জাতীয় পার্টি দুর্বল হবে না।

জাপা চেয়ারম্যান বলেন, বেগম রওশন এরশাদ আমাদের অত্যন্ত শ্রদ্ধাভাজন। আমার অসুস্থতা বা দুর্ঘটনার সংবাদে তিনি বারবার ফোন করে খোঁজখবর নিয়েছেন। তিনি বারবার বলেছেন, আমি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হতে চাই না। তিনি বারবার সন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন, জাতীয় পার্টি এখন ভালোভাবে চলছে।

কাদের বলেন, প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে আমাদের তিনি পরামর্শ দিতে পারেন। কিন্তু তা বাস্তবায়ন করা বা না করা পার্টির চেয়ারম্যানের এখতিয়ার। জাতীয় পার্টির শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা বেগম রওশন এরশাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তাদের মনে হয়েছে তিনি (রওশন এরমাদ) কারও কথায় বা চাপে কাউন্সিল ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছেন। অসুস্থতার সুযোগ নিয়ে বাইরের কিছু মানুষ হয়তো বেগম রওশন এরশাদের নাম ব্যবহার করে ভিন্ন এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চাচ্ছে। যারা জাতীয় পার্টির কেউ না, কেউ হয়তো ছিলেন অনেক আগে জাতীয় পার্টিতে, আবার সুর্নিদিষ্ট অভিযোগে কাউকে কাউকে পার্টি থেকে বহিস্কার করা হয়েছে, তারা বেগম রওশন এরশাদকে অপব্যবহার করতে অপচেষ্টা চালাচ্ছে।

জিএম কাদের বলেন, অসুস্থতার কারণে দীর্ঘ প্রায় এক বছর বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে তিনি (রওশন এরশাদ) অবদান রাখতে পারছেন না। তাই পার্টির সংসদীয় দল জাতীয় পার্টির ঐক্য রক্ষা ও পার্টিকে ষড়যন্ত্রের হাত থেকে বাঁচাতে বেগম রওশন এরশাদকে বিরোধীদলীয় নেতা না রাখার পক্ষে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গেলো এক বছরে জাতীয় পার্টির সংসদীয় দল অসুস্থ বিরোধীদলীয় নেতার কর্মকাণ্ড নিয়ে ভাবেনি। এখন জাতীয় পার্টির স্বার্থেই বিরোধীদলীয় নেতার পদ থেকে তাকে সরিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তিনি বলেন, জাতীয় পার্টির সংসদীয় দল তাদের সিদ্ধান্ত লিখিতভাবে জাতীয় সংসদের স্পিকারকে জানিয়েছেন। এখন বিধি অনুযায়ী স্পিকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।

নির্বাচনী জোট গঠন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, নির্বাচনের পূর্ব মুহূর্তে দলীয় ফোরামে আলোচনা করে জোট গঠনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তখনকার বাস্তবতা ও সাধারণ মানুষের প্রত্যাশার কথা বিবেচনা করে জোট গঠনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে জাতীয় পার্টি। তবে, এখন আমরা ৩০০ আসনেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। দলকে আরও শক্তিশালী করতে নিয়মিত কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছি।

 

বিআ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন