আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

যে গ্রামটিতে রানির স্মৃতি এখনো অম্লান!

বছরটি ছিলো ১৯৮৩ । নভেম্বর মাস। তৎকালীন সামরিক প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের শাসনামলে চার দিনের সফরই স্বাধীন বাংলাদেশে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের একমাত্র সফর।

বাংলাদেশের মানুষের স্মৃতিতে তিনি অম্লান। বাংলাদেশের একটি গ্রামের নারীদের দেখতে এসেছিলেন রানি।

ওই গ্রামে যাওয়ার মূল কারণ ছিল রানি একটি স্বনির্ভর গ্রাম পরিদর্শন করতে চেয়েছিলেন। তাঁকে পুকুরে মাছ ধরা, মুড়ি বানানোসহ বিভিন্ন গ্রামীণ শিল্প দেখানো হয়।

ঢাকা থেকে ট্রেনে করে চারদিনের সরকারি সফরের একদিনে গাজীপুরের শ্রীপুরে গিয়েছিলেন ব্রিটেনের রানি। সেখান থেকে গাড়িতে করে বৈরাগীরচালায় যান গ্রামটির নারীদের দেখতে।

ওই গ্রামে গিয়ে মুড়ি ভাজা, লেপ-তোশক সেলাই এবং মাটির বাসন প্রস্তুতির মতো হস্তশিল্পের কাজ দেখেন রানি।

গ্রামের একটি কাঁঠাল বাগানে স্থানীয় নারীদের সঙ্গে গল্প করেন রানি এলিজাবেথ। এ সময় এক নারী রানিকে রূপার চাবি উপহার দিয়েছিলেন। ওই চাবিটি প্রতীকি অর্থে দেয়া হয়। এর অর্থ হচ্ছে যেকোনো সময় রানি বৈরাগীরচালা গ্রামে আসতে পারবেন। তার জন্য গ্রামের সব দরজা সর্বদা খোলা।

রানির এই সফর এখনো গ্রামটির মানুষের কাছে স্মরণীয় হয়ে আছে। রানির আগমন উপলক্ষ্যে ওই গ্রামে ব্যাপক উন্নয়নকাজ হয়েছিল, যা পরবর্তী সময় এলাকায় কলকারখানা গড়ে উঠতে সাহায্য করে। 

সফরকালে রানি জাতীয় স্মৃতিসৌধে গিয়ে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের অমর শহিদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

এর আগে, ১৯৬১ সালে দ্বিতীয় এলিজাবেথ প্রথমবার তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের ঢাকা সফরে আসেন। ওই বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি এক রাজকীয় সফরে ঢাকা আসেন তিনি। 

প্রসঙ্গত ৭০ বছর ধরে যুক্তরাজ্য শাসন করে আসা রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ বৃহস্পতিবার ৯৬ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার মৃত্যুতে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ সরকার। 

সূত্র: বিবিসি

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন