আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

প্রতিদিন ৮০০ কুকুরকে খারবার দেন রজনী

দোকানের খাবার খেয়ে প্যাকেটটি রাস্তায় ফেলে দিয়েছিলেন কেউ। খিদে মেটাতে সেই কাগজের প্যাকেটটিই চিবিয়ে খাচ্ছিল একটি পথকুকুর। বাসে করে যাওয়ার সময় সেই ক্ষুধাতুর কুকুরটিকে চোখে পড়েছিল রজনী শেট্টির।

তবে অন্যদের মতো মুখ ফিরিয়ে নেননি তিনি। কুকুরটির মুখে খাবার তুলে দিতে তখনই বাস থেকে নেমে পড়েছিলেন রজনী। এরপর রাস্তার দোকান থেকে অমলেট কিনে পরম যত্নে কুকুরটিকে নিজের হাতে খাইয়েছিলেন তিনি। এটা ছিল প্রায় ১৫ বছর আগেকার কথা।

সেদিনের পর থেকে প্রতি দিনই মেঙ্গালুরুর পথকুকুরদের মুখে খাবার তুলে দিচ্ছেন রজনী।

ভারতের মেঙ্গালুরুর বাসিন্দা রজনী শেট্টি। সেখানকার মানুষের বাসায় গৃহ পরিচারিকার কাজ করে সংসার চালান তিনি। তিন মেয়ে, স্বামীকে নিয়ে টানাটানির সংসারে হাজারো চাহিদা মিটিয়েও পথকুকুরদের জন্য খাবারের বন্দোবস্ত করে চলেছেন রজনী।

একটি-দু’টি নয়, প্রতি দিন ৮০০ পথকুকুরের জন্য খাবার রান্না করে তাদের খাওয়ান রজনী। এ কাজে তাকে সঙ্গ দেন পুরো পরিবার।

ভারতীয় সংবাদ সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া (পিটিআই)-কে দেয়া একটি সাক্ষাৎকারে রজনী বলেছেন তার নিত্য দিনের জীবসেবার কথা। ৮০০ কুকুরদের খাওয়ানোর জন্য প্রতি দিন ৬০ কেজির বেশি মাংস-ভাত রান্না করেন রজনী। সংসারের নানা ঝক্কি সামলেও পথকুকুরদের জন্য খাবার তৈরির সময় বের করে নিয়েছেন তিনি। এ কাজ করতে করতেই কেটে গেছে ১৫ বছর।

রজনীর ভাষায় , ‘‘প্রতি দিন রাত ৮টার পর রাস্তার কুকুরদের খাবার দিতে বের হই। যাতে রাস্তার গাড়িঘোড়ার জন্য কুকুরদের কোনও সমস্যা না হয়। এ কাজে আমার স্বামী আর পুরো পরিবার তো বটেই, এমনকি আশপাশের লোকজনও সাহায্য করে আমাকে।’’

কুকুরদের খাবার খাওয়ানোর পাশাপাশি তাদের অনেককে নিজের বাড়িতে এনে চিকিৎসার বন্দোবস্তও করেন রজনী। নিজেই তাদের ক্ষতে ওষুধ লাগিয়ে দেন। 

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, আজ পর্যন্ত দু’হাজার জীবজন্তুকে উদ্ধার করেছেন তিনি।

সংবাদমাধ্যমে রজনী বলেছেন, ‘‘ওই পথকুকুরদের মুখে কিছুটা খাবার তুলে দিলেই দেখবেন ওরা আপনাকে নিঃশর্ত ভালবাসায় ভরিয়ে দিচ্ছে। ওদের ভালবাসায় যে আনন্দ পাই, সেটাই চাই এ জীবনে।’’

পথকুকুরদের খাবার দেয়ার পাশাপাশি বিড়াল, খরগোশসহ বহু পশুপাখিকেও উদ্ধার করেছেন রজনী।

অনন্যা চৈতী

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন