আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আপিলে খালাস

২৩ বছর আগে গাজীপুরের জয়দেবপুরে করিমন নেছা নামে এক নারীকে হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আবুল কালাম ওরফে কালু মিয়াকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট।

সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স খারিজ করে বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত। আসামি পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মাসুদ হাসান চৌধুরী পরাগ, অ্যাডভোকেট এসএম আলীম ও অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান।

এর আগে ২০১৭ সালের ৩১ জানুয়ারি অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত আবুল কালাম ওরফে কালুকে মৃত্যুদণ্ড দেন।

ওই রায়ের বিষয়ে উচ্চ আদালত বলেন, অনুমানের উপর ভিত্তি করে বিচারিক আদালত এই রায় দিয়েছিল যা গ্রহণযোগ্য নয়।

মামলার বিবরণী থেকে জানা গেছে, করিমন নেছার সঙ্গে একই এলাকার চাঁন মিয়ার বিয়ে হয়। এ সংসারে তাদের একটি ছেলে এবং একটি মেয়ে সন্তান হয়। বিয়ের পর গাজীপুর সিটি করপোরেশনের চাঁনপাড়া এলাকার আবুল কালাম ওরফে কালু মিয়ার সঙ্গে করিমন নেছার পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে কালু মিয়ার চাপে করিমন নেছা ও তার স্বামী চান মিয়া পরস্পরকে তালাক দেন। এরপর থেকে ভাই সফিজ উদ্দিনের বাড়িতে বসবাস করতেন করিমন।

১৯৯৯ সালের ১২ জানুয়ারি সন্ধ্যায় বোন রহিমন নেছার বাড়ি থেকে ইফতার করে ভাইয়ের বাড়িতে ফেরার পথে নিখোঁজ হয় করিমন। ২৫ জানুয়ারি দুপুরে বাড়ির পাশের পুকুরে কচুরিপানার নিচ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ব্যাপারে ওই দিনই নিহতের ভাই সফি উদ্দিন বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে জয়দেবপুর থানায় মামলা করেন।

পুলিশ তদন্ত করে চারজনকে অভিযুক্ত করে ২০০৪ সালের ৩ জুন আদালতে চার্জশিট দাখিল করে।

৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ২০১৭ সালের ৩১ জানুয়ারি গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. ফজলে এলাহী ভূইয়া আবুল কালামকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন।

রায়ে একই সঙ্গে আসামিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ ছাড়া অন্য একটি ধারায় কালুকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং আরও তিন হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তবে এ মামলার অন্য তিন আসামিকে খালাস দেন আদালত। খালাসপ্রাপ্তরা হলেন- একই এলাকার কান্দুর আলীর ছেলে ফজলুল হক, নাসির আলী গাইনের ছেলে নাজিম উদ্দিন ওরফে নজুমদ্দিন ও জালাল উদ্দিন।

পরে মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। এসময় আসামি এর বিরুদ্ধে আপিল করলে আজ আদালত এই রায় দেন।

অনন্যা চৈতী

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন