আইন-বিচার

ভিকারুননিসার ১৬৯ ছাত্রীর ভর্তি বাতিলই থাকবে: আপিল বিভাগ

বয়সের নিয়ম না মানার অভিযোগে রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের স্কুল শাখায় ভর্তিকৃত প্রথম শ্রেণির ১৬৯ শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল থাকবে বলে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল খারিজ করে দিয়েছেন।

রোববার (১৪ জুলাই) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ রাফিউল ইসলাম।

রিট আবেদনকারী দুজন অভিভাবকের পক্ষে আইনজীবী শামীম সরদার।

লিভ টু আপিল আবেদনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক ও মুস্তাফিজুর রহমান খান।

আইনজীবী মোহাম্মদ রাফিউল ইসলাম জানান, ১৬৯ জন শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল সংক্রান্ত হাইকোর্ট বিভাগ যে রায় দিয়েছিলেন, সেই রায়ের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকের করা পৃথক লিভ টু আপিল করেছিলেন। দুটি আবেদনই শুনানি শেষে আজ আপিল বিভাগ খারিজ করে দিয়েছেন। ফলে স্কুল কর্তৃপক্ষ যে ১৬৯ জনের ভর্তি বাতিল করেছিল সেটা বাতিলই থেকে যাবে। আর অপেক্ষমাণ তালিকায় যারা রয়েছেন তারা ১৬৯ আসনে ভর্তির সুযোগ পাবেন।

তিনি বলেন, যাদের ভর্তি বাতিল করেছেন তারা স্কুলে অধ্যয়নরত না। আর আসনগুলো খালি আছে। এখন সিরিয়াল অনুসারে ভর্তি করা হবে।

গেলো ২১ মে হাইকোর্ট রায় দেন। ওই রায়ের ২৯ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি সম্প্রতি প্রকাশ করা হয়েছে। এরপর ভর্তি বাতিল হওয়া শিক্ষার্থীদের পক্ষে লিভ টু আপিল করা হয়।

বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক-আল-জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চের দেয়া রায়ে বলা হয়, ১৫ দিনের মধ্যে ১৬৯ শিক্ষার্থীর শূন্য আসনে অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে সিরিয়াল অনুযায়ী শিক্ষার্থী ভর্তি করতে ভিকারুননিসা নূন স্কুল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আরও ভালো ভর্তি প্রক্রিয়া, জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনি ব্যবস্থা নিতে একটি অনুসন্ধান কমিটি করতে বলা হয়েছে।

ভিকারুননিসায় ভর্তি নিয়ে বয়সের নিয়ম না মানার অভিযোগ এনে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি ইচ্ছুক দুই শিক্ষার্থীর মা গেলো ১৪ জানুয়ারি রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২৩ জানুয়ারি হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন। তার ধারাবাহিকতায় ২৮ ফেব্রুয়ারি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) একটি স্মারক হাইকোর্টে উপস্থাপন করে।

মাউশির ওই আদেশ মতে, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে বয়সের ঊর্ধ্বসীমা অনুসরণ করেনি। ১ জানুয়ারি ২০১৭ সালের আগে জন্মগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের ভর্তি করার প্রক্রিয়া ছিল বিধিবহির্ভূত। এসব ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ২০১৫ সালে জন্মগ্রহণকারী ১০ জন ও ২০১৬ সালে জন্মগ্রহণকারী শিক্ষার্থী সংখ্যা ১৫৯ জন। এসব শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল করে শিগগিরই মাউশিকে অবহিত করার অনুরোধ করা হলো।

এরপর স্কুল কর্তৃপক্ষ ১৬৯ জনের ভর্তি বাতিল করে। ১৬৯ শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিলের পর এখন অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে এক সপ্তাহের মধ্যে শূন্য আসনে ভর্তি নিতে গেলো ৬ মার্চ নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

ওই আদেশের বিরুদ্ধে বাতিলকৃত শিক্ষার্থীর অভিভাবক আপিল বিভাগে আবেদন করেন।

আপিল বিভাগ ২০ মার্চ হাইকোর্টে জারি করা রুল দুই মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে বলেন। এ সময় পর্যন্ত ওই শিক্ষার্থীদের ভর্তি বাতিল ও অপেক্ষমাণদের ভর্তির ওপর স্থিতাবস্থা দেওয়া হয়। এর মধ্যে ভর্তি বাতিল হওয়া ১২০ শিক্ষার্থীর পক্ষে আরেকটি রিট করা হয়।

প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গেলো ২৫ মার্চ হাইকোর্ট রুল দেন। পৃথক রুলের ওপর একসঙ্গে শুনানি শেষে ২১ মে রায় ঘোষণা করা হয়।

 

এসি//

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন