জাতীয়

দাবী আদায়ে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতাদের

সরকারী চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার ও গুম হওয়া ব্যক্তিদের মুক্তি, শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা তুলে নেওয়ার জন্য ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছে  বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। এসময়ের মধ্যে দাবী মানা না হলে কঠিন কর্মসূচি ঘোষনা দেওয়া হবে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তারা।

শনিবার (২৭ জুলাই) দিবাগত রাতে  অনলাইন প্লাটফর্ম গুগল মিটে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কর্মসূচি ঘোষণা করেন সংগঠনের অন্যতম সমন্বয়ক মো. আবদুল হান্নান মাসউদ। এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সমন্বয়ক মাহিন সরকার এবং সহ–সমন্বয়ক রিফাত রশীদ।

সংবাদ সম্মেলনে মো. আবদুল হান্নান মাসউদ বলেন, রোববার (২৮ জুলাই) জেলা, উপজেলাসহ সব পর্যায়ে হেলথ ফোর্স এবং লিগ্যাল ফোর্স গঠন করা হবে। তারা সারাদেশে আহত ও নিহতদের তথ্য সংগ্রহ করবেন।

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তাদের এই বিষয়গুলো মেনে না নিলে ‘বাংলা ব্লকেডের’ চেয়েও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন সংগঠনের নেতারা।  এছাড়া সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিশ্ব সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণে রোববার সারাদেশে গণসংযোগ ও প্রতিবাদী গ্রাফিতিও আঁকবেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা বলেন, 'গ্রেপ্তার ও গুম হওয়া ব্যক্তিদের আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মুক্তি দিতে হবে এবং শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে করা মামলা তুলে নিতে হবে। পাশাপাশি মন্ত্রী থেকে শুরু করে কনস্টেবল পর্যন্ত যারা সহিংসতার জন্য দায়ী তাদেরকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। যদি এই দাবি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে না মানা হয় তাহলে কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে।'

সংবাদ সম্মেলনে নেতারা দাবি করেন, 'সহিংসতায় অন্তত ২৬৬ জন নিহত হয়েছেন।' এ সময় বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা ভালো নেই দাবি করে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা এবং প্রভাবশালী রাষ্ট্রের প্রতি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগের আহ্বান জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের এক দফা বাস্তবায়ন হয়নি দাবি করে বিশ্ববাসীর কাছে 'গণহত্যার' বিচার দাবি করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এ সময় আন্দোলনের পেক্ষাপট তুলে ধরে সংগঠনের সমন্বয়ক মাহিন সরকার বলেন, ‘১১-১২ দিন আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করেছি। কিন্তু চীন সফর থেকে এসে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া একটি বক্তব্যকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীরা প্রতিক্রিয়া জানান। এখন সরকারের পক্ষ থেকে ছাত্রদের দাবি মেনে নেয়া হয়েছে বলা হলেও তা সত্য না। আমরা সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চাই না। আমাদের প্রতিরোধ জারি থাকবে। আমাদের সঙ্গে সাধারণ মানুষও যোগ দিয়েছেন।’

সংবাদ সম্মেলনে সংগঠরে সমন্বয়করা বলেন, ‘সহিংসতা ও মৃত্যুর ঘটনায় সরকারের পক্ষ থেকে দুঃখপ্রকাশও করা হয়নি বরং শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক ট্যাগ দিয়ে অপরাজনীতি করা হচ্ছে। এ দায় সরকারেরই নিতে হবে।’

প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক আদালতে এই গণহত্যার বিরুদ্ধে মামলা করার কথাও বলেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতারা। পাশাপাশি  বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের প্রতি আওয়াজ তোলার আহ্বানও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।

এমআর//

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন