কখন তার মন খারাপ হয়ে যায় জানালেন শ্রীলেখা
এক বছর হতে চলল নিজের সবথেকে কাছের মানুষ বাবাকে হারিয়েছেন অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র। সম্প্রতি সম্পন্ন করেছেন বাবার এক বছরের বাৎসরিকের কাজ। মাকে হারিয়েছেন আগেই। একমাত্র মেয়ে মাইয়্যা, চারপেয়ে সন্তানরা ও বাবাকে নিয়েই ছিল শ্রীলেখার সংসার। একবছর আগে নিজের বড় আশ্রয়ের স্থল সেই বাবাকে হারিয়ে ভেঙে পড়েছিলেন শ্রীলেখা। তবে সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলার নামই জীবন। তাই তো বাবা-মা না থাকলেও মেয়ে এবং চারপেয়েদের সাথে নিজের সময় বইয়ে নিয়ে যাচ্ছেন অভিনেত্রী। সামনেই পুজো। সকলেরই পুজোর প্ল্যানিং ইতিমধ্যে ডান। কিন্তু শ্রীলেখা এসব বিষয়ে একেরবারেই লেস-ইন্টারেস্টেড। সম্প্রতি এক সংবাদ মাধ্যমকে এমনটাই জানিয়েছেন অভিনেত্রী।
শ্রীলেখার কথায়, পুজোর উত্তেজনা আমি টের পাইনা। বরাবরই আমি ইন্ট্রোভার্ট। বিশাল বড় গ্রূপে স্বছন্দ বোধ করি না। মা বাবা চলে যাওয়ার পর থেকে একা থাকার ইচ্ছেটা বহুগুণ বেড়েছে। সেই হিসেবে আমি আনসোশ্যালও। পুজোয় বেশি মিশিটিশি না। অনেকেই ভাবেন এ কেমন মানুষ রে বাবা, পুজোয় আড্ডা দেয় না? আসলে গল্প করবোই বা কার সাথে? স্কুলের বন্ধুরা অধিকাংশ বিদেশে। কর্মসূত্রে কেউ ভীনরাজ্যেই সেটেলড। আর ছোটবেলার পাড়ার বন্ধুরা সব উত্তর কলকাতায়। আমি থাকি দক্ষিণের একটা ফ্ল্যাটে। সেখানেও পুজো হয়। কিন্তু সেভাবে মিশি না। আসলে স্বার্থপরদের সাথে মিশতে আমার একেবারেই ভালো লাগেনা। যারা নিজের কথা ভাবে, নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত। আমি তাদের থেকে একশো হাত দূরে থাকি।
একই সাথে শ্রীলেখা জানান, ছোট একটা বৃত্ত রয়েছে আমার, তার মধ্যেই মিশি। পুজোয় আমার একঘর বন্ধু চাই না। মনের মতো দুটো বন্ধু হলেই যথেষ্ট। ছোটবেলায় উত্তর কলকাতার অনেক ঠাকুর দেখেছি। তখন ভিড়টা ভালো লাগতো। এখন ভিড় দেখলেই ভয় হয়। মেয়ের একা একা বেরোনোর বয়স হয়নি। ও এখনও ছোট। আর ও খুব একটা ঠাকুর দেখে তেমনটাও নয়। সেদিক থেকে আমি চাপমুক্ত।
অভিনেত্রী জানান, ঠিক করেছি এবার পুজোটা কোনও মফস্বল এলাকায় কাটাবো। আসানসোলে যাওয়ার প্লানিং পাকা। কলকাতার ভিড় থেকে নিজেকে সরিয়ে ছিমছাম কোনও পুজো মণ্ডপে বসে আড্ডা দেব।
শ্রীলেখা জানিয়েছেন, এখন পুজোর মার্কেটিং নিয়ে আলাদা করে কোন উত্তেজনা হয় না। কাজের প্রয়োজনে সারা বছরই টুকটাক করে কেনাকাটি চলে তাই পূজার আলাদা করে কিছু কিনবো না পড়া হয়নি এমন অনেক জামা আলমারিতেই পড়ে আছে। সেগুলো দিয়েই পুজো কাটাবো।
শ্রীলেখা বলেন, ছোটবেলার দিন গুলো যদিও আলাদা ছিল। তখন নতুন টপ, স্কার্ট, জুতো, বিছানায় পাশে নিয়ে ঘুমাতাম। মহালয়ার দিন সকালে উঠে পড়তাম। রেডিওতে মহালয়া শুনতাম। একটু বড় হলাম যখন তখন টিভিতে দেখতাম। পুজোয় যে যাই উপহার দিক। বাবা-মায়ের দেওয়া উপহারের মজাটাই ছিল আলাদা। সে ভালোবাসাটা আনপ্যারালাল। মা চলে যাওয়ার পর থেকে ওটাই মিস করি। পুজো এলে আরও বেশি করে মনে পড়ে। কোনও মণ্ডপে দুর্গা ঠাকুরের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকলেই ভেসে ওঠে মায়ের মুখটা, মন খারাপ হয়ে যায়।