ছাত্র-শিক্ষার্থীদের বিজয় অবশ্যই হবে: মির্জা ফখরুল
বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে ‘গণজাগরণ শুরু হয়ে গেছে, আন্দোলন বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে’। ছাত্র-শিক্ষার্থীদের বিজয় অবশ্যই হবে। বলেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার (০৩ আগস্ট) বনানীতে দলের স্থায়ী কমিটির কারাবন্দি সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর বাসায় তার পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের পর আন্দোলনের সর্বশেষ অবস্থা নিয়ে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমি বলব যে, দেশে এখন একটা গণজাগরণ শুরু হয়ে গেছে। আপনারা লক্ষ্য করে দেখছেন যে, এখন শিক্ষার্থীদের কোটা বৈষম্য বিরোধী যে আন্দোলন সেই আন্দোলনে সাধারণ মানুষ যোগ দিয়েছে। শুধু ছাত্ররা নয় এখন, অভিভাবক, চিকিৎসক, আইনজীবী, শিল্পী-সাংস্কৃতিক কর্মী, সাংবাদিকসহ সব পেশার মানুষ এই আন্দোলনে যুক্ত হয়েছেন। তারা যুক্ত হয়েছেন সব ভয়কে উপেক্ষা করে। এবারের আন্দোলনের সবচেয়ে বড় দিক হচ্ছে, মানুষ অন্যায়ের বিরুদ্ধে তারা জেগে উঠেছেন, যে জাগরণ সৃষ্টি হয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমি মনে করি যে, এই আন্দোলন তার বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে এসে গেছে। বিশ্বাস করি জনগণের বিজয় অবশ্যই হবে, ছাত্র-শিক্ষার্থীদের বিজয় অবশ্যই হবে। আমরা প্রথম দিন থেকে, ছাত্ররা যখন আন্দোলন শুরু করেছে তখনই এর যে যৌক্তিকতা, তা নিয়ে আমরা কথা বলেছি, তাদের সঙ্গে সহযোগিতা শুধু নয়, তাদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেছি। আরও বেশি দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে চাই, ছাত্রদের এই যৌক্তিক আন্দোলন এ আন্দোলনে আমাদের শুধু সমর্থন নয়, আমাদের সব রকমের সহযোগিতা থাকবে। যেহেতু শিক্ষার্থীদের আন্দোলন এটা; সেজন্য রাজনৈতিক দল হিসেবে আমাদের যে দায়িত্ব-কর্তব্য সেই দায়িত্ব-কর্তব্য পালন করছি, করতে থাকব। আমাদের সারাদেশে সমস্ত নেতা-কর্মীদের প্রতি এই আহ্বান জানাতে চাই যে, ছাত্রদের এই যৌক্তিক আন্দোলনে সবাইকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে হবে।
বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, আমরা যেটা সব সময় বলে আসছিলাম, তরুণদের জাগ্রত হওয়ার কথা। সেই তরুণরাই এবার জেগে উঠেছে। এজন্যই আমরা অত্যন্ত আশাবাদী। এ কারণে, তরুণরা যখন জেগে ওঠে, ছাত্ররা যেখানে জেগে ওঠে, যুবকরা যেখানে জেগে ওঠে সেই আন্দোলনকে পরাজিত করা কারো পক্ষে সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, আজ ভয়াবহ যে দানবীয় ফ্যাসিস্ট সরকার তারা যেভাবে হত্যা করেছে, সেটা অবর্ণনীয়, ভাষায় বর্ণনা করার মতো নয়। শত শত ছাত্রদের তারা হত্যা করেছে। আমরা যখন দেখতে পাই যে, তাদের গণকবর দেওয়া হয়েছে। আমি যেটা দেখলাম পত্রিকায় ৫৯ জনকে গণকবর দেওয়া হয়েছে। এটা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকেও তো হার মানিয়ে যাচ্ছে। চিন্তাই করা যায় না!
এর আগে আজ শনিবার সকালে বিএনপি মহাসচিব প্রথমে যান বনানী ডিওএইচএসে দলের কারাবন্দি স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানের বাসায় তার অসুস্থ স্ত্রী কান্তা ইসলামকে দেখতে যান। এই সময়ে তার ছেলে অনিক খান, স্ত্রী রাবেয়া আক্তার রাখি খান উপস্থিত ছিলেন।
পরে বনানীতে কারাবন্দি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর স্ত্রী তাহেরা খসরুর সঙ্গে দেখা করেন। এ সময় তার ছেলে ইসরাফিল খসরু উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গেলো ২১ জুলাই নজরুল ইসলাম খান ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে তাদের বাসা থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা গ্রেপ্তার করে।
দুই নেতার পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের সময়ে বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে ছিলেন দলের মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান।
এসি//