সৈকতে নারীকে ওঠবস করানো সেই যুবক ডিবি হেফাজতে
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে এক নারীকে হেনস্থা এবং প্রকাশ্যে শারীরিক নির্যাতন করার অপরাধে অভিযুক্ত ফারুকুল ইসলামকে ডিবি হেফাজতে নেয়া হয়েছে।
আজ শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে তাকে ডিবি হেফাজতে নেয়া হয়েছে বলে গণমাধ্যমে জানিয়েছেন ডিবির ওসি জাবেদ মাহমুদ। অভিযুক্ত যুবকের বাড়ি চট্টগ্রামের সাতকানিয়া এলাকায় বলে জানিয়েছেন ওসি।
ওসি জানান, সৈকতে এক নারীকে কান ধরিয়ে উল্লাস করা অভিযুক্ত যুবক ফারুকুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি হেফাজতে নেয়া হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক নারীকে মারধরের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিওতে দেখা যায়, রাতে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে এক নারীকে কান ধরিয়ে ওঠবস করাচ্ছে একদল অতিউৎসাহী জনতা। তাদের তোপের মুখে পড়া ওই ভুক্তভোগী নারী কানে হাত দিয়ে ওঠবস করতে অপারগতা প্রকাশ করছেন।
কিন্তু, সেখানে উপস্থিত এক যুবক লাঠি দিয়ে ওই নারীকে একাধিকবার আঘাত করেন। সেই লাঠির আঘাত থেকে রক্ষা পেতে ভুক্তভোগী নারী কান ধরে ওঠবস করছেন। শুধু তাই নয়, পাশে দাঁড়িয়ে থাকা জনতা ওই নারীর কান ধরে ওঠবসের গণনাও করছিলেন।
অভিযুক্ত যুবকদের দাবি- ওই নারী ও তৃতীয় লিঙ্গের কিছু লোক সৈকতে বসে বিভিন্ন অঙ্গ-ভঙ্গি করতেন। তারা পর্যটকদের নানাভাবে হেনস্তা করতেন।
এই বিষয়ে স্থানীয় এবং পর্যটকরা বলছেন, অপরাধ করলে দেশে আইন- কানুন আছে। একজন নারীকে প্রকাশ্যে এভাবে শারীরিক নির্যাতন কোনভাবেই কাম্য নয়।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের সহকারী পুলিশ সুপার মো. আবুল কালাম বলেন, কানধরে যাকে ওঠবস করানো হচ্ছে সে মেয়ে নয় তৃতীয় লিঙ্গ। ওই দিন রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের নামে কিছু যুবক পুলিশের অগোচরে সৈকতে এমন কাণ্ড করেছে। আরেক মেয়ের কাছ থেকে একটি মোবাইলও ছিনিয়ে নিয়েছে। পরে মোবাইলটা উদ্ধার করে মেয়েকে ফেরত দিয়েছে পুলিশ। তবে এভাবে আইন হাতে নেওয়ার অধিকার কারও নেই। তারা পুলিশের সহযোগিতা নিতে পারত। পুলিশকে না জানিয়ে এমন ঘটনা আইনগত অপরাধ। বিষয়টি জেলা পুলিশের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে দুই নারীকে মারধর ও হয়রানির তিনটি ভিডিও ফুটেজ শুক্রবার সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে দিনভর তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান নেটিজেনরা। তারা দাবি করেন, ওই তরুণ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় সমম্বয়ক ফারুকুল ইসলাম। এই পরিচয় দিয়েই তিনি নারীদের ওপর নিপীড়ন চালান।
তবে কক্সবাজারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের দাবি, ফারুকুল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক বা নেতৃত্ব পর্যায়ের কেউ নন।
কেএস//