এবার লেবাননেও স্থল হামলা শুরু করছে ইসরাইল
ফিলিস্তিনের গাজার পর এবার লেবাননেও স্থল হামলা শুরু করতে যাচ্ছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী। লেবাননে অব্যাহত বিমান হামলার মধ্যেই এই অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে নেতানিয়াহু বাহিনী। সম্ভাব্য স্থল অভিযানের অংশ হিসেবে উত্তর ইসরায়েলে সামরিক বাহিনীর চলমান মহড়াও অনুষ্ঠিত হয়েছে। খুব শিগগিরই স্থল হামলা শুরু হবে। ইসরাইলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে দেশটির বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম এ তথ্য জানিয়েছে।
বুধবার(২৫ সেপ্টেম্বর) টানা তৃতীয় দিনের মতো লেবাননে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। দক্ষিণ লেবানন ও পূর্বাঞ্চলীয় বেকা উপত্যকাসহ দেশটির বিভিন্ন এলাকায় দফায় দফায় বিমান হামলা চালানো হয়। হামলা থেকে বাদ যায়নি রাজধানী বৈরুতও।গত সোমবার থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় নারী, শিশুসহ অন্তত ৫৯২ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও প্রায় ২ হাজার মানুষ।
ইসরাইলি বাহিনীর বর্বর হামলায় বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছেন কয়েক লাখ মানুষ। লেবাননের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, তাঁর দেশে এখন যা হচ্ছে, সেটি কার্যত ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ। এর মধ্যেই ইসরায়েলের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম জানিয়েছে, লেবাননে সম্ভাব্য স্থল অভিযানের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে তাদের সেনাবাহিনী। প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট স্থল অভিযানের জন্য প্রশিক্ষণরত সেনাদের সঙ্গে কথা বলেছেন।
স্থল অভিযানের বিষয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী গ্যালান্ট বলেন, সম্প্রতি গাজা উপত্যকা থেকে লেবানন সীমান্ত স্থানান্তর করা ‘সাঁজোয়া বহরের যোদ্ধা ও প্যারাট্রুপারদের’ সঙ্গে দেখা করেছেন তিনি। প্রতিরক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দাদের নিজেদের বাড়িঘরে ফেরানোর লক্ষ্য অর্জনে আমরা যেকোনো ধরনের পদক্ষেপ নিতে ইচ্ছুক।’
এদিকে, লেবাননে ইসরাইলি আগ্রাসনের নিন্দা জানিয়েছে মিসর, জর্ডান ও ইরাক। এক যৌথ বিবৃতিতে দেশগুলো সতর্ক করে বলেছে, মধ্যপ্রাচ্যকে সর্বাত্মক যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে ইসরাইল।
এর আগে মঙ্গলবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে এক বৈঠকে মিলিত হন এই তিন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। এ সময় তাঁরা এই যুদ্ধ বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে তাঁদের দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে ‘নাৎসি একনায়ক অ্যাডলফ হিটলারের’ সঙ্গে তুলনা করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান।
তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, ৭০ বছর আগে হিটলারকে যেভাবে মানবিক মিত্রশক্তির মাধ্যমে দমন করা হয়েছিল, একইভাবে নেতানিয়াহু ও তাঁর খুনে নেটওয়ার্ককে মানবিক মিত্রশক্তির মাধ্যমে দমাতে হবে।মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বলেছেন, একটি সর্বাত্মক সংঘাতে যাওয়ার ‘আগ্রহ কারও মধ্যেই নেই’ এবং বিদ্যমান সংকটের ‘কূটনৈতিক সমাধান এখনো সম্ভব’। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ‘লেবাননকে আরেকটি গাজায় পরিণত করা বিশ্ব মেনে নিতে পারবে না’ বলে সতর্ক করেছেন।
এমআর//