জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেল মধুপুরের আনারস
ভৌগলিক নির্দেশক বা জিআই পণ্য হিসেবে টাঙ্গাইলের মধুপুরে উৎপাদিত আনারস স্বীকৃতি লাভ করেছে। বাংলাদেশ সরকারের ভৌগলিক নির্দেশক ইউনিট গত মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) মধুপুরের আনারসকে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি সনদ দেয়।
বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ট্রেডমার্ক অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. মুমিন হাসান।
তিনি বলেন, এই জিআই সনদপ্রাপ্তির মাধ্যমে বাংলাদেশের ঐতিহ্যমণ্ডিত এই ফলটির চাষের গুণগত পরিবর্তনের পাশাপাশি বিদেশে রফতানির সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে মধুপুরের আনারসের আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডিং ও আন্তর্জাতিক বাজারে মার্কেট ভ্যালু অনেক বেড়ে যাবে।
এতে রফতানি বাজারে বাংলাদেশের মধুপুরের আনারসের আলাদা পরিচিতি তৈরি হবে জানিয়ে মুমিন বলেন, এখন এর সুযোগ নিতে রফতানিকারক ও খাদ্যপণ্য প্রক্রিয়াজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো এগিয়ে আসতে পারে। আমরা এরমধ্যেই 'জিআই ট্যাগ' এর জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছি। এটা অনুমোদন পেলে আমরা যেসব প্রতিষ্ঠানকে 'জিআই' দিচ্ছি তাদের ট্যাগটাও দিয়ে দেব। ফলে আমাদের পণ্যকে নকল করে কেউ আর বাজারজাত করতে পারবে না। কারণ পণ্যের লেবেলে কিউআর কোড থাকবে।
মুমিন বলেন, এর মাধ্যমে এই আনারসের বিস্তারিত বিবরণসহ এর যে উৎপাদক যে কৃষক, তার তথ্যও সেখানে উঠে আসবে। যা কিউআর কোড ধরে সার্চ করলেই সব তথ্য উঠে আসবে। যা আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের মধুপুরের আনারসের আলাদা অবস্থান তৈরি করবে। ফলে যে সব অঞ্চলে মধুপুরের আনারস উৎপাদন হয়, সেসব অঞ্চলের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখতে পারে।
টাঙ্গাইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, টাঙ্গাইলের মধুপুর গড় অঞ্চলে বছরে কয়েকশ কোটি টাকার বিপুল পরিমাণ আনারস উৎপন্ন হয়। এর মধ্যে জায়ান্ট কিউ বা স্থানীয়ভাবে ক্যালেন্ডার নামে পরিচিত এ অঞ্চলের প্রধান জাত। বাকিগুলো হলো হানি কুইন যা স্থানীয়ভাবে জলডুঙ্গি নামে পরিচিত এবং এমডি—২ ও আশ্বিনা।
টাঙ্গাইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ—সহকারী কৃষি কর্মকর্তা নার্গিস আক্তার গণমাধ্যমকে বলেন, এ বছর জেলায় ৭ হাজার ৭৭৩ হেক্টর জমিতে আনারসের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে মধুপুর উপজেলায় ৬ হাজার ৬৩০ হেক্টর এবং ঘাটাইল উপজেলায় ১ হাজার ১৪০ হেক্টর জমিতে চাষ হচ্ছে। গত বছর দুই উপজেলায় ৭ হাজার ৬৬১ হেক্টর জমিতে আনারস চাষ হয়েছে এবং ২ লাখ ৮২ হাজার টন আনারস উৎপাদিত হয়েছে।
এএম/