বাংলাদেশ

চাঁদাবাজি, প্রতারণার অভিযোগ

যে কারণে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দ্বারস্থ হলো নোমান গ্রুপ

বাংলাদেশে টেক্সটাইল ও গার্মেন্টস সেক্টরের শীর্ষ স্থানীয় রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান নোমান গ্রুপ। প্রতিষ্ঠানটি চাঁদাবাজি ও প্রতারণার শিকার হচ্ছে এমন অভিযোগ করে একটি চিঠি দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে।   

চিঠির অনুলিপি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব, পুলিশের আইজি, সিআইডির অতিরিক্ত আইজিপি এবং ডিএমপি কমিশনারের কাছেও পাঠানো হয়েছে ।   

চিঠিতে হলুদ সাংবাদিক, নাম সর্বস্ব পত্রিকা, মানবাধিকার সংস্থার সমন্বয়ে একটি সংঘবদ্ধ চক্র এবং প্রতিষ্ঠান থেকে চাকরিচ্যুত দুর্নীতিবাজ কর্মীদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও প্রতারণার অভিযোগ করা হয়েছে।    

অভিযোগের পাশাপাশি এসব ঘটনায় জড়িত কাজী মশিউর রহমান দীপু, কাজী আনোয়ার হোসেন, হারুন অর রশিদ ওরফে বডি বিল্ডার হারুন, হেলাল উদ্দিনসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেছে প্রতিষ্ঠানটি।  

এ ব্যাপারে নোমান গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোহাম্মাদ আব্দুল্লাহ জাবের বলেন, ‘ব্ল্যাকমেইলিং ও চাঁদাবাজি করাই এই সংঘবদ্ধ চক্রের মূল উদ্দেশ্য।’ 

‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে পরিশ্রম ও সততার সঙ্গে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছি এবং লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতির সাথে জড়িত নই। ফলে ঐতিহাসিক পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোকে টার্গেট করেছে চাঁদাবাজ চক্র। এই চক্রকে চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা না হলে দেশের রপ্তানিখাত মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হবে, যা বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভসহ সামগ্রিক অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে,’ বলেন তিনি।

আব্দুল্লাহ জাবের আরও বলেন, ‘চক্রটি যে ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে তা শিল্প প্রতিষ্ঠানের ইমেজের ওপর ভয়াবহ আঘাত হানছে। বিশেষ করে নোমান গ্রুপের মতো রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রতিটি নেতিবাচক খবরের জন্য বিদেশি ক্রেতাদের কাছে জবাবদিহি করতে হয়। আমরা সরকারি সংস্থা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রতি আহ্বান জানাই, যেকোনো উড়ো চিঠি বা নামসর্বস্ব সংবাদমাধ্যমের খবরে প্রভাবিত না হয়ে, যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য।’

নোমান গ্রুপ গত প্রায় ২৫ বছর ধরে ৯০৩টি আর্ন্তজাতিক ক্রেতার সঙ্গে সুনামের সঙ্গে রপ্তানি বাণিজ্য পরিচালনা করছে।  এই গ্রুপের বার্ষিক টার্ন ওভারের পরিমাণ ১.৩ বিলিয়ন ডলারের।  প্রায় ৮০ হাজার শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তা কাজ করছেন। 

জাতীয় অর্থনীতিতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরুপ গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান জাবের অ্যান্ড জোবায়ের ফেব্রিক্স লিমিটেড বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে টানা ১২বার দেশের সেরা রপ্তানিকারক হিসেবে ‘জাতীয় রপ্তানি ট্রফি’ পেয়েছে। 

এ ছাড়া কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বেকার সমস্যা সমাধান, মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে অবদান রাখায় জাবের অ্যান্ড জোবায়ের ফেব্রিক্স লিমিটেড ও নোমান টেরিটাওয়াল মিলস্ লিমিটেড একাধিকবার শিল্প মন্ত্রণালয়ের রাষ্ট্রপতি শিল্পোন্নয়ন পুরস্কার পায়। এই গ্রুপের চেয়ারম্যান ও পরিচালকবৃন্দ ২০০৭ সাল থেকে অদ্যবধি সিআইপি (রপ্তানি) ও সিআইপি(শিল্প) নির্বাচিত হয়ে আসছেন।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর রাজধানীতে বিভিন্ন তৈরি পোশাক কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ ও নাশকতার ঘটনা ঘটতে থাকে। তবে অন্তর্বতীকালীন সরকারের নেয়া নানা পদক্ষেপে দেশের তৈরি পোশাক কারখানায় বর্তমানে স্থিতিশীলতা বিরাজ করছে। 

 এনএস/  

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন