হোয়াইট হাউসে ফিরে ট্রাম্প যে ৭ টি প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করবেন
ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার পরিকল্পনা করছেন, এবং তিনি ঘোষণা করেছেন যে তার মূল লক্ষ্য হবে "প্রতিশ্রুতি দেয়া এবং প্রতিশ্রুতি রাখা।" তার প্রতিশ্রুতি তালিকায় রয়েছে অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক সংকট সমাধান। আসুন, বিস্তারিতভাবে দেখি তার পরিকল্পনার দিকনির্দেশনা।
প্রথমত, অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি আমেরিকান ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অনথিভুক্ত অভিবাসন প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলবেন। তিনি আবার মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণ শেষ করারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যা তিনি তার প্রথম মেয়াদে শুরু করেছিলেন। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এত বড় স্কেলে অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ করতে আইনি ও আর্থিক চ্যালেঞ্জ দেখা দিতে পারে।
দ্বিতীয়ত, অর্থনীতি ও ট্যাক্স নীতি নিয়ে ট্রাম্পের প্রতিশ্রুতি ভোটারদের কাছে বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে। তিনি উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং কর ব্যবস্থায় পরিবর্তনের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের করের বোঝা হ্রাস করবেন বলে জানিয়েছেন। কর্পোরেট করের হার কমানোর পাশাপাশি বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে চীনসহ বেশিরভাগ বিদেশি পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করেছেন। যদিও বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, এই ধরনের শুল্ক বাড়ালে আমেরিকান জনগণের জন্য পণ্যের দাম বেড়ে যেতে পারে।
তৃতীয়ত, জলবায়ু নীতি নিয়ে ট্রাম্প আগের মতোই রক্ষণশীল অবস্থানে রয়েছেন। তিনি পরিবেশগত বিধিনিষেধ শিথিল করতে চান, বিশেষত আমেরিকান গাড়ি শিল্পের সহায়তায়। তার মতে, নবায়নযোগ্য শক্তির তুলনায় জীবাশ্ম জ্বালানি উৎপাদন আরও সাশ্রয়ী হবে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, দীর্ঘমেয়াদে এটি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় প্রভাব ফেলতে পারে।
চতুর্থত, আন্তর্জাতিক সংকট বিশেষ করে ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়ে ট্রাম্প বলেছেন, তিনি আলোচনার মাধ্যমে "২৪ ঘণ্টার মধ্যে" এই সংঘাতের সমাধান করতে পারবেন। তবে বিরোধীরা মনে করছেন, এতে রাশিয়া উৎসাহিত হতে পারে। এছাড়া গাজা সংঘাতেও তিনি নিজেকে ইসরায়েলের সমর্থক হিসেবে উপস্থাপন করেছেন, যদিও এই সংঘাত শেষ করার আহ্বানও জানিয়েছেন।
পঞ্চমত, গর্ভপাত আইন নিয়ে ট্রাম্পের অবস্থান মিশ্র। তিনি জাতীয়ভাবে গর্ভপাত নিষিদ্ধ করবেন না বলে জানিয়েছেন, যদিও তার সমর্থকদের একাংশ গর্ভপাত নিষেধাজ্ঞার পক্ষে।
ষষ্ঠত, ৬ জানুয়ারি দাঙ্গায় জড়িতদের ক্ষমা করার প্রতিশ্রুতিও ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণার অন্যতম বিষয়। তিনি জানিয়েছেন, দোষী সাব্যস্ত হওয়া কিছু সমর্থকদের মুক্তি দিতে তিনি আগ্রহী, যাদের তিনি "ভুলভাবে কারারুদ্ধ" বলে মনে করেন।
সপ্তমত, বিশেষ কৌঁসুলি জ্যাক স্মিথ যিনি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে দুটি ফৌজদারি মামলার তদন্ত করছেন, তাকে তিনি ক্ষমতা গ্রহণের সাথে সাথেই বরখাস্ত করবেন বলে জানিয়েছেন। এই মামলা প্রসঙ্গে তিনি এটিকে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র বলে উল্লেখ করেছেন।
ট্রাম্পের পরিকল্পনায় কিছু বিষয় স্পষ্ট থাকলেও, অনেক ক্ষেত্রে কৌশলগত দিকের অভাব লক্ষ্য করা যায়। তাঁর প্রতিশ্রুতির মধ্যে রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক প্রভাবের বিষয়টি বিশ্লেষকদের কাছে এখনও আলোচনার বিষয়।
জেডএস/