হিজাব বিতর্কে বিভক্ত রায় দিল ভারতের সুপ্রিম কোর্ট
ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ব্যর্থ হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মুসলিম ছাত্রীদের হিজাব পরা নিয়ে সৃষ্ট বিতর্কের চূড়ান্ত সমাধানে পৌঁছাতে। বহুল আলোচিত কর্ণাটকের কলেজে হিজাব নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মুসলিম ছাত্রীদের আবেদনের জবাবে বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) দেশটির সুপ্রিম কোর্ট বিভক্ত রায় দিয়েছে।
দেশটির শীর্ষ আদালতের একটি প্যানেল বলেছে, শ্রেণিকক্ষে হিজাব পরার অনুমতির সিদ্ধান্তের ব্যাপারে বিচারকরা বিভক্ত রায় দিয়েছে। পরবর্তী নির্দেশনার জন্য বিষয়টি প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানো হয়েছে।
প্যানেলের দুই বিচারকের একজন হেমন্ত গুপ্ত। তিনি বলেছেন, তাদের মতের ভিন্নতা রয়েছে। তিনি শ্রেণিকক্ষে হিজাব নিষিদ্ধের পক্ষে তার মত দিয়েছেন। অন্যদিকে বিচারক সুধাংশু ধুলিয়া মুসলিম ছাত্রীদের হিজাব পরার নিষেধাজ্ঞা বাতিলের পক্ষে মতামত দিয়েছেন।
বিচারক সুধাংশু ধুলিয়া বলেছেন, হিজাব পরা আসলে ব্যক্তিগত পছন্দের বিষয়। এর বাইরে কিছু নয়। সবকিছু ঊর্ধ্বে তার মাথায় ছিল মেয়েশিশুদের শিক্ষা। তিনি তার বিচারক ভাইয়ের মতামতের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করছেন।
মুসলিম ছাত্রীদের আবেদন খারিজ করে দিয়ে বিচারক হেমন্ত গুপ্ত বলেছেন, তাদের মতের ভিন্নতা রয়েছে। আবেদন খারিজ করে দেয়ার আগে আবেদনকারীদের ১১টি প্রশ্ন করেন তিনি। পরে তিনি বলেন, কর্ণাটকের হাইকোর্ট হিজাব নিষিদ্ধের পক্ষে যে রায় দিয়েছে, তিনি সেই রায়ের সঙ্গে একমত পোষণ করছেন।
আদালতের বিচারকদের প্যানেল হিজাব বিতর্কে বিভক্ত রায় দেয়ায় এখন এই বিষয়ে চূড়ান্ত নির্দেশনার জন্য ভারতের প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানো হয়েছে।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কর্ণাটকে মুসলিম শিক্ষার্থীদের হিজাব পরে কলেজের শ্রেণিকক্ষে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। সেই সময় রাজ্যটির একাধিক স্কুলে হিজাব পরিহিত মুসলিম ছাত্রীদের ঢুকতে না দেয়াকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া বিক্ষোভ-প্রতিবাদ দেশটির বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে।
পরে রাজ্যের মুসলিম ছাত্রীরা সরকারের হিজাব নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কর্ণাটকের হাইকোর্টে আবেদন করে। গত ১৫ মার্চ কর্ণাটকের উদুপিতে গভর্নমেন্ট প্রি-ইউনিভার্সিটি গার্লস কলেজের কিছু মুসলিম ছাত্রীর করা এক আবেদন খারিজ করে দেয় হাইকোর্ট।
রায়ে আদালত সেই সময় জানায়, শ্রেণিকক্ষের ভেতরে ছাত্রীদের হিজাব পরার অনুরোধ ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসীদের জন্য অপরিহার্য ধর্মীয় চর্চার অংশ নয়।
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা