আন্তর্জাতিক

অর্থ আত্মসাতে সহায়তায় যুক্তরাজ্যে টিউলিপকে জিজ্ঞাসাবাদ

দেশের অবকাঠামো প্রকল্প থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে। যেখানে নাম এসেছে শেখ হাসিনার বোনের মেয়ে ও যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিকেরও। এই ঘটনায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে যুক্তরাজ্যের মন্ত্রিপরিষদ অফিসের ‘ন্যায় এবং নৈতিকতা দল’। 

রোববার (২২ ডিসেম্বর) যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদ সংস্থা দ্য সানডে টাইমসের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে একটি পারমাণবিক শক্তি প্রকল্প থেকে নিজের পরিবারকে প্রায় চার বিলিয়ন পাউন্ড আত্মসাৎ করতে সহায়তা করার অভিযোগে মন্ত্রিপরিষদ অফিসের ‘ন্যায় ও নৈতিকতা দল’ টিউলিপ সিদ্দিককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।

ব্রিটেনের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির মন্ত্রিসভার সদস্য ইকনোমিক সেক্রেটারি টু দি ট্রেজারি অ্যান্ড সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিকের কাজ যুক্তরাজ্যের অর্থবাজারের ভেতরের দুর্নীতি সামাল দেয়া।

আর তার বিরুদ্ধেই সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য রাশিয়ার সঙ্গে একটি দুর্নীতির চুক্তিতে সাহায্য করার অভিযোগ রয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, রূপপুর প্রকল্প থেকে ৩.৯ বিলিয়ন (৩৯০ কোটি) পাউন্ড সরিয়ে নেয় শেখ হাসিনার পরিবার ও তার মন্ত্রীরা।

টিউলিপ সিদ্দিককে গেলো বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও খবরটি সামনে আসে রোববার।

সানডে টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তরাজ্যের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমারের বন্ধু এবং তার নির্বাচনী এলাকার পাশের আসন হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড হাইগেইট আসনের প্রতিনিধি।

বাংলাদেশে দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগের বিষয়ে দেশটির মন্ত্রিপরিষদ অফিসের ন্যায় এবং নৈতিকতা দলের (পিইটি) প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠকে যোগ দিতে সম্মত হন টিউলিপ সিদ্দিক। গত বৃহস্পতিবার পিইটি’র ওই কর্মকর্তা টিউলিপ সিদ্দিকের অফিসে যান। পরে ওই কর্মকর্তার কাছে ১০ বিলিয়ন পাউন্ডের রূপপুর প্রকল্পের দুর্নীতির সঙ্গে তার জড়িত থাকার অভিযোগের বিষয়ে জবাব দেন টিউলিপ।

প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালে বাংলাদেশে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তিতে মধ্যস্থতা করেন টিউলিপ, যেখানে প্রকল্পের ব্যয় বাড়িয়ে ধরা হয়েছিল। মূলত টিউলিপ সিদ্দিকের খালা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশন যে ব্যাপক তদন্ত শুরু করেছে তারই আওতায় পড়েছেন টিউলিপ সিদ্দিক।

দুদক শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানাসহ তাদের পরিবারের বেশ কয়েকজন সদস্য এবং আওয়ামী লীগ সরকারের জ্যেষ্ঠ বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে। সানডে টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ২০ বছরের বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা শেখ হাসিনাকে স্বৈরশাসক হিসেবে দেখা হয়, তার সরকার কঠোরভাবে ভিন্নমত দমন করত।

উল্লেখ্য, টিউলিপ সিদ্দিক ২০১৫ সালে উত্তর লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড হাইগেইট আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। এই আসনটি প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমারের আসন হবর্ন অ্যান্ড সেন্ট প্যানক্রাসের লাগোয়া।

 

এসি//

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন