বীর মুক্তিযোদ্ধাকে হেনস্তার ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টার নিন্দা
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাইকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। একইসঙ্গে এই ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) প্রেস উইং থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাইকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনকে ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, জনাব আব্দুল হাই হত্যাসহ ৯টি মামলার আসামি।
প্রেস উইংয়ের পাঠানো ক্ষুদে বার্তায় সকলকে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এর আগে, রোববার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে জাতির সূর্য সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানুর গলায় জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছিত করে স্থানীয়রা। চৌদ্দগ্রামের কুলিয়ারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ১ মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের ভিডিও নিয়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন মিলে মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানুকে জুতার মালা পরিয়ে এলাকা ছেড়ে যেতে বলছেন। এ সময় গ্রামবাসীর কাছে তাকে ক্ষমা চাওয়ার জন্যও বলতে শোনা যায়। জুতার মালা পরানো ও এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দেওয়ার ১ মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের এই ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আগস্টের গণআন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত শনিবার নিজ এলাকা লুধিয়ারায় ফিরে আসেন আবদুল হাই কানু। এরপর গতকাল রোববার স্থানীয় কয়েকজন তাকে লাঞ্ছনা করে এলাকা থেকে বের করে দেয় বলে জানা গেছে।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার প্রথমদিকে শীর্ষ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে তার ভালো সম্পর্কের কারণে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করেন। স্থানীয় এক জামায়াত নেতাকে এলাকা ছাড়া করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। কিন্তু পরে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতির কারণে এলাকায় থাকতে পারেননি কানু। এমনকি হত্যা মামলায় আসামিও হয়েছেন।
আবদুল হাই কানুকে লাঞ্ছনায় নেতৃত্ব দেয়া ব্যক্তিরা জামায়াতে ইসলামীর সমর্থক বলে দাবি করেছেন স্থানীয় অনেকে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা জামায়াতের আমির মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘এ ঘটনার সঙ্গে স্থানীয় জামায়াতের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। প্রবাসী আবুল হাসেম আমাদের দলের কেউ না। তবে সমর্থক কিংবা অনুসারী হলেও হতে পারে। এ বিষয়ে খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে।’
এদিকে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে লাঞ্ছনার ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ জানিয়েছেন অনেকে।
এসি//