২৫ বছর পর আক্ষেপ ঘুচলো মার্কিন সঙ্গীত শিল্পী বিয়ন্সের
যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসে প্রতিবারের মতো এবারও বসেছে গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ডের আসর। লস অ্যাঞ্জেলেসের ক্রিপ্টো ডটকম এরেনায় সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ 'গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ড ২০২৪'-এর ৬৬তম আসর বিশ্বখ্যাত তারকাদের দ্যুতিতে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।
গ্র্যামির এই জৌলুস আরও বাড়িয়ে তোলেন মার্কিন গায়ক, গীতিকার, নৃত্যশিল্পী, অভিনেত্রী ও রেকর্ড প্রযোজক বিয়ন্সে জিযেল নোয়েলস।
১১টি মনোনয়ন পেয়ে গ্র্যামি মনোনয়নে এবার আগেই রেকর্ড গড়েছিলেন তিনি। বাংলাদেশ সময় সোমবার সকালে অনুষ্ঠিত ৬৭তম গ্র্যামির আসরে এবার বহুল কাঙ্খিত পুরষ্কার জিতলেন গায়িকা। এর মাধ্যমে দীর্ঘ ২৫ বছর পর তার আক্ষেপ ঘুচলো।
গত বছরের ২৯ মার্চ মুক্তি পায় ‘কাউবয় কার্টার’। বিয়ন্সের এটি অষ্টম স্টুডিও অ্যালবাম। এই অ্যালবামে গানে গানে মূলত কৃষ্ণাঙ্গ কাউবয়দের সংস্কৃতি তুলে ধরেছেন বিয়ন্সে।
যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে লোকসংগীত, রক অ্যান্ড রোল, জ্যাজ, পপসহ নানা ধরনের গান শুনে বড় হয়েছেন বিয়ন্সে।
অ্যালবামটিতে শৈশব আর কৈশোরে শোনা সেই সব গানের মূল ভাব ছড়িয়ে দিয়েছেন এই প্রজন্মের শ্রোতাদের কাছে। এ অ্যালবামের জন্যই গ্র্যামিতে ১১ মনোনয়ন বাগিয়েছিলেন বিয়ন্সে।
এ অ্যালবামটির জন্যই অ্যালবাম অব দ্য ইয়ার পুরস্কার জিতেছেন গায়িকা। সবচেয়ে বেশি (৩২ টি) গ্র্যামি পুরস্কার বিয়ন্সের দখলে থাকলেও আগে
কখনোই অ্যালবাম অব দ্য ইয়ার পুরস্কার পাননি তিনি। তাই এবারের গ্র্যামি তাঁর কাছে বিশেষভাবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
এ ছাড়া সেরা কান্ট্রি অ্যালবামের পুরস্কার জিতেছেন বিয়ন্সে; এই প্রথম এ বিভাগের পুরস্কার উঠল কোনো কৃষ্ণাঙ্গ গায়িকার হাতে। ১১ মনোনয়ন পেলেও শেষ পর্যন্ত বিয়ন্সে পেয়েছেন তিন পুরস্কার।
সর্বোচ্চ ৩২ গ্র্যামি জয়ের রেকর্ডটা তাঁর দখলে আগে থেকেই ছিল। সবচেয়ে বেশি মনোনয়নের রেকর্ডটাও এবার বাগিয়ে নিয়েছিলেন বিয়ন্সে। দীর্ঘ অপেক্ষার শেষে এল এই জয়।
৫০ বছর পর এই প্রথমবার কোনো কৃষ্ণাঙ্গ সংগীতশিল্পী গ্র্যামি জিতেছেন বেস্ট কান্ট্রি অ্যালবাম বিভাগে। এই পুরস্কার জেতার জন্য বিয়ন্সেকে দীর্ঘ ২৫ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে। তাঁর দীর্ঘ কেরিয়ারের এক নতুন অধ্যায়ের শুরু।
বিয়ন্সের হাতে গ্র্যামি তুলে দেন বিশ্বনন্দিত গায়িকা টেইলর সুইফট। অ্যাওয়ার্ড নিয়ে বিয়ন্সে বলেন, পুরষ্কার হাতে নেওয়ার পর বিয়ন্সে বললেন ‘আমি আজ পরিপূর্ণ, সম্মানিত।
বিয়ন্সে বলেন, ‘আমি সবাইকে অনুপ্রেরণা জোগাতে চাই যেন নিজের আগ্রহ নিয়েই যেন সকলে কাজ করেন। সেই সকল মানুষদের যারা শহরের হওয়া যাওয়া দাবানল দুর্ঘটনায় জানপ্রাণ দিয়ে মোকাবিলায় করেছেন।’ পুরো দর্শক এসময় তাকে দাঁড়িয়ে করতালি দিয়ে অভিবাদন জানান।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী বিয়ন্সে নোলস। যার গানে মেতে ওঠে পুরো বিশ্ব। একের পর এক গানে শ্রোতা-দর্শকদের মাতিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
তার কনসার্ট মানেই যেন বিখ্যাত ব্যক্তিদের নজরকাড়া উপস্থিতি।এই শতকের প্রথম দশকে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে সফল গায়িকা নির্বাচিত হয়েছেন বিয়ন্সে নোয়েলস।
এর আগে, ৫২তম গ্র্যামির আসরে শীর্ষ ৬টি পুরস্কার জিতেছিলেন বিয়ন্সে নোয়েলস। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা বিবিসি স্বাভাবিকভাবেই বিয়ন্সে নোয়েলসকে 'গ্র্যামির রানী' হিসেবে অভিহিত করে।
২০১২ সালে জনপ্রিয় সাময়িকী পিপল সংগীত তারকা বিয়ন্সে নোয়েলসকে বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দরী নারী হিসেবে মনোনীত করে। পত্রিকাটির বিশেষ সংখ্যায় বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দরী নারীদের তালিকা প্রকাশ করা হয়।
এতে এক নম্বরে জায়গা করে নেন বিয়ন্সে। এই কৃতিত্ব অর্জনের অনুভূতি জানাতে গিয়ে ওইসময় বিয়ন্সে বলেন, ‘এর আগে নিজেকে যতটা সুন্দরী বলে ভেবেছি, এখন এর চেয়ে আরও বেশি মনে হচ্ছে। কারণ, আমি সন্তানের জন্ম দিয়েছি।
প্রসঙ্গত, গ্র্যামি এ্যাওয়ার্ড হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল আক্যাডেমি অফ রেকর্ডিং আর্টস এন্ড সাইন্সেস কর্তৃক প্রবর্তিত বার্ষিক পুরস্কার। সঙ্গীত শিল্পে অসামান্য অবদান বা কৃতিত্ব রাখার জন্য শিল্পীদের প্রত্যেক বছর গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়ে থাকে।
আমেরিকার সবচেয়ে সম্মানজনক এই সঙ্গীত পুরষ্কার প্রবর্তন করেন আমেরিকার ন্যাশনাল আক্যাডেমি অফ রেকর্ডিং আর্টস এন্ড সাইন্সেস। ১৯৫৮ সালে এই গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানের যাত্রা শুরু।
এমআর//