হঠাৎ জাবির দেয়ালে সর্বহারা পার্টির পোস্টার!

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) রাতের আঁধারে বামপন্থি নিষিদ্ধ সশস্ত্র সংগঠন পূর্ব বাংলার সর্বহারা পার্টির পোস্টার লাগানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার ভবনের পেছনে কলা ও মানবিক অনুষদের এক্সটেনশন ভবনের জন্য নির্ধারণ করা স্থানে টিনের দেয়ালে এ পোস্টার দেখা যায়।
গত বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে এ পোস্টারগুলো দেখা যাচ্ছে। তবে কে বা কারা পোস্টার সাটিয়েছেন তা জানা যায়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বায়ান্ন টিভিকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
আজ শনিবার সকালে সরেজমিনে গিয়েও দুই ধরনের মোট ৮টি পোস্টার দেখা যায়।
প্রথম পোস্টারে লিখা ছিলো, ‘দুনিয়ার সর্বহারা ও নিপীড়িত জাতি, জনগণ এক হও! ২ জানুয়ারি, ২০২৫ পার্টি-প্রতিষ্ঠাতা ও মহান নেতা কমরেড সিরাজ সিকদার এর-৫০তম মৃত্যুবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করুন। কমরেড সিরাজ সিকদারের বিপ্লবী ঐতিহ্যকে ভিত্তি করুন! তার দুর্বলতা ও ত্রুটিকে অতিক্রম করুন! গ্রামাঞ্চল, কৃষি-বিপ্লব ও গণযুদ্ধকে কেন্দ্র করে বিপ্লবী রাজনীতিকে এগিয়ে নিয়ে চলুন। মার্কসবাদ-লেনিনবাদ-মাওবাদ-জিন্দাবাদ!’
এ ছাড়া অপর পোস্টারে লেখা রয়েছে, ‘সর্বহারা পার্টির ৫ম জাতীয় কংগ্রেস ২০২৪-এর ডাক, মার্কন পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদের দালাল ও সেনা-এনজিও-বুদ্ধিজীবী-বড় ধনীদের ‘অন্তর্বর্তী সরকার’ শ্রমিক-কৃষক-সাধারণ জনগণের সরকার নয়, বিপ্লবী গণক্ষমতা প্রতিষ্ঠার লড়াই অব্যাহত রাখা, মাওবাদীগণ, ঐক্যবদ্ধ হোন! পূর্ববাংলার মাওবাদী আন্দোলনের পাঁচ দশক অভিজ্ঞতার সারসংকলন করুন! গ্রামভিত্তিক গণযুদ্ধ গড়ে তুলুন। মার্কিন, চীন, রশিয়া, ইইউসহ সব সাম্রাজ্যবাদ-নিপাত যাক! ভারতীয় সম্প্রসারণবাদ-নিপাত যাক! মাওবাদ-জিন্দাবাদ। নয়া গণতান্ত্রিক বিপ্লব-জিন্দাবাদ গণযুদ্ধ-জিন্দাবাদ।’
সশস্ত্র সংগঠনের পোস্টারিংয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, ‘আমরা পোস্টারের বিষয়ে অবগত হয়েছি। এ বিষয়ে আমরা পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারা ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে গোয়েন্দা ব্যবস্থা জোরদারের বিষয়েও কথা বলেছি।’
উল্লেখ্য, পূর্ব বাংলার সর্বহারা পার্টি একটি মাওবাদী রাজনৈতিক দল। এটি ১৯৬৮-৬৯ সালে সিরাজ সিকদারের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত হয়। দলটি সশস্ত্র বিপ্লবের মাধ্যমে রাষ্ট্র ক্ষমতায় চেতে চায়। স্বাধীনতা যুদ্ধের আগে ও পরে দলটি গেরিলা যুদ্ধের মাধ্যমে কার্যক্রম চালায়। তবে ১৯৭৫ সালের পর বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে পড়ে। দলটি বর্তমানে গোপনে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে।
আই/এ