অন্তর্বর্তী সরকার আইনি দলিল ও জনগণের ইচ্ছা দিয়ে গঠিত: হাইকোর্ট

ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার আইনি বৈধতা দ্বারা সমর্থিত এবং বাংলাদেশের জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন হিসেবে গঠিত হয়েছে বলে হাইকোর্ট পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন। বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) এক রিট খারিজের পূর্ণাঙ্গ আদেশে বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই মন্তব্য করেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশ পরিচালনার জন্য অন্তর্বর্তী সরকার গঠন বিষয়ে রাষ্ট্রপতি সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুয়ায়ী সুপ্রিম কোর্টের কাছে মতামত চান। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের মতামতের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। এরপর উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা শপথ নেন।
অন্তর্বর্তী সরকার গঠন ও শপথ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের কাছে পাঠানো রেফারেন্স ও মতামতের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মহসীন রশিদ। শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ গত ১৩ জানুয়ারি রিটটি সরাসরি খারিজ করে আদেশ দেন। রিট খারিজ করে হাইকোর্টের দেয়া পূর্ণাঙ্গ আদেশ বুধবার প্রকাশিত হয়।
হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ আদেশে বলা হয়, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার কোনো আইনি দলিল দিয়ে সমর্থিত নয় বলে রিট আবেদনকারীর (আইনজীবী মোহাম্মদ মহসিন রশিদ) বক্তব্যে এসেছে। উল্লেখ করা প্রাসঙ্গিক যে, বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি এক অনন্য পরিস্থিতিতে সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুয়ায়ী উপদেষ্টামূলক মতামত গ্রহণ করেন। মতামত অনুযায়ী কাজ করেছেন। তাই এটি আইনি দলিল দিয়ে সমর্থিত, বাংলাদেশের জনগণের ইচ্ছার দ্বারা সমর্থিত।
পূর্ণাঙ্গ আদেশে আরও বলা হয়, ‘২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে যে গণঅভ্যুত্থান হয়েছিল, তা আমাদের ইতিহাসের অংশ এবং আশা করি আগামী বহু বছর ধরে জনগণ যত্নে থাকবে।’
রিটটি ভিত্তিহীন, বিভ্রান্তিমূলক ও হয়রানিমূলক বলে উল্লেখ করে আদালত তা সরাসরি খারিজ করে দেন।
সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদে সুপ্রিম কোর্টের উপদেষ্টামূলক এখতিয়ারের বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে। এই অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, যদি রাষ্ট্রপতির নিকট প্রতীয়মান হয় যে আইনগত কোনো প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে বা উত্থাপনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট, তাহলে তিনি বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিবেচনার জন্য প্রেরণ করতে পারেন। আপিল বিভাগ প্রয়োজনীয় শুনানির পর বিষয়টি সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে তাদের মতামত প্রদান করবে।
এসি//