দ্বিতীয়বার বিয়ের পিঁড়িতে প্রতীক, কনে সেই বাঙালি অভিনেত্রী
ভালবাসা দিবসেই জীবনের নতুন অধ্যায়ের সূচনা করলেন অভিনেতা প্রতীক বাব্বর এবং তাঁর দীর্ঘদিনের প্রেমিকা অভিনেত্রী প্রিয়া বন্দ্যোপাধ্যায়। নিকট আত্মীয়, বন্ধুদের উপস্থিতিতেই এদিন সাতপাকে বাঁধা পড়েন তাঁরা। এর আগে, ২০২৩ সালের ভ্যালেন্টাইন্স ডে’তে নিজেদের সম্পর্কের কথা আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করেছিলেন অভিনেতা। আর শুক্রবারই তাঁরা প্রেমিক প্রেমিকা থেকে স্বামী স্ত্রী হওয়ার শপথ গ্রহণ করলেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মুম্বাইয়ের বান্দ্রায় প্রতীকের মা প্রয়াত স্মিতা পাতিলের বাড়িতেই বিয়ের অনুষ্ঠান সেরেছেন তারা। সোশ্যাল মিডিয়ায় যে ছবিগুলি দেখা গিয়েছে, তার প্রত্যেকটা ছবিতেই ভীষণ আবেগপ্রবণ দেখাচ্ছে প্রতীককে। কখনও তিনি স্ত্রীয়ের কাঁধে মাথা রেখেছেন, কখনও আবার বসে রয়েছেন মায়ের ছবির সামনে কখনও আবার স্ত্রীকে চুম্বন করছেন। পাশাপাশি প্রিয়াও যেন আগলে রেখেছেন প্রতীককে।
বিশেষ দিনের জন্য প্রিয়া ও প্রতীক দু’জনই বেছে নিয়েছিলেন তরুণ তাহিলিয়ানির পোশাক। আইভরি আর সোনালি লেহঙ্গায় ঝলমল করছিলেন প্রিয়া। গোটা লেহঙ্গায় সুতোর সূক্ষ কাজে ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল ভারতীয় সংস্কৃতির বিভিন্ন দিকগুলিকে। মাথায় করসেটের ওড়না দিয়েছিলেন প্রিয়া। কুন্দন আর পান্নার গয়না পরেছিলেন প্রিয়া। মাথায় ছিল টিকলি। ভারি নেকলেস আর কানের দুলে সাজ সম্পূর্ণ করেছিলেন তিনি। খুব হালকা ও অল্প ছিল রূপটান।
অন্যদিকে প্রতীক স্ত্রীয়ের পোশাকের সঙ্গে রং মিলিয়ে একটি সামনে খোলা শেরওয়ানি পরেছিলেন। একটি শার্ট আর ধুতির সেট দিয়ে শোরওয়ানিটি পরেছিলেন প্রতীক। একটি মুক্তোর নেকপিস পরেছিলেন প্রতীক। বর কনের পোশাকের রঙের সঙ্গে মিলিয়েই সাজানো হয়েছিল বিয়ের আসর। আইভরি আর সাদা রঙেই সাজিয়ে তোলা হয়েছিল বিয়ের আসর। সঙ্গে সাদা ফুল আর সবুজ পাতার মেলবন্ধন গোটা বিবাহ বাসরে একটা স্বপ্নের মতো সুন্দর আমেজ এনেছিল।
বিয়ের দিন প্যাস্টেল শেডের পোশাকেই দুজনেই সেজে উঠেছিলেন। প্রতীক ও প্রিয়ার বিয়ে ছিল একেবারেই ছিমছাম। সোশাল মিডিয়ায় ছাদনাতলার ছবি শেয়ার করে প্রিয়া ও প্রতীক নিজেই।
প্রতীক ও প্রিয়া আগেই জানিয়ে ছিলেন, তাঁদের এই বিয়ে হবে একেবারেই ছিমছাম। খুব কাছের মানুষরা থাকবে এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত।
তবে সূত্র বলছে, প্রতীক নাকি তাঁর বাবা অর্থাৎ অভিনেতা রাজ বব্বরকে বিয়েতে নিমন্ত্রণই করেননি! তবে এই খবর রটলেও, এই নিয়ে মুখ খোলেননি কেউই।
বলিউডের প্রয়াত অভিনেত্রী স্মিতা পাতিল ও অভিনেতা রাজ বাব্বরের একমাত্র ছেলে প্রতীক বাব্বরের এটি দ্বিতীয় বিয়ে। ২০০৮ সালে ‘জানে তু…ইয়া জানে না’ ছবির হাত ধরে বলিপাড়ায় পা রাখেন প্রতীক।
ইন্ডাস্ট্রিতে চার বছর কাটানোর মধ্যেই এক সহ-অভিনেত্রীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তিনি।
বলিউড পাড়ার জল্পনা, ‘এক দিওয়ানা থা’ ছবির শুটিং করার সময় সহ-অভিনেত্রী অ্যামি জ্যাকসনের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয় প্রতীকের। প্রেমের সম্পর্কে গড়ায়।
তবে অ্যামির সঙ্গে সম্পর্ক বেশি দিন টেকেনি প্রতীকের। ছবিমুক্তির এক বছরের মধ্যেই সম্পর্কে ইতি টানেন অ্যামি এবং প্রতীক।
অ্যামির সঙ্গে বিচ্ছেদের পর বলিপাড়ার প্রযোজক সান্যা সাগরের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন প্রতীক। সান্যার পিতা রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। দীর্ঘ দিন সম্পর্কে থাকার পর সান্যাকে বিয়ে করেন প্রতীক। কিন্তু সেই সম্পর্কও বেশি দিন টেকেনি।
২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে সান্যাকে বিয়ে করেন প্রতীক। বিয়ের পরের বছরেই বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন তাঁরা। ২০২০ সাল থেকে তাঁরা আলাদা থাকতে শুরু করেন। ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে আইনি বিচ্ছেদ হয় প্রতীক এবং সান্যার।
বিবাহবিচ্ছেদের পর এক বছর পার হতে না হতেই আবার প্রেমে পড়েন প্রতীক। বাঙালি কন্যা প্রিয়ার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তিনি। সম্প্রতি ‘চালচিত্র’ নামের বাংলা ছবিতে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে প্রিয়াকে।
প্রিয়ার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ফাঁস হয় ২০২৩ সালে। ওই বছরের নভেম্বর মাসে প্রিয়ার জন্মদিনই, তাঁকে প্রেমের প্রস্তাব দেন প্রতীক বাব্বর।
সেই সময় তিনি জানিয়ে ছিলেন, আমি সেপারেশনে ছিলাম। আর প্রিয়া সবে তাঁর এনগেজমেন্ট ভেঙেছিল। ঠিক সেই সময়ই আমাদের দেখা হয়। বন্ধুত্ব হয়।
যখন প্রথমবার প্রিয়ার ঠোঁটে ঠোঁট রেখেছিলাম, সেদিনই বুঝতে পেরেছিলাম, প্রিয়াই আমার জীবন। আর তাই প্রেমের প্রস্তাব দিতে দেরি করিনি।
প্রসঙ্গত, বাঙালি কন্যা প্রিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় বলিউডের সঙ্গে সঙ্গে তামিল, তেলুগু ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে দারুণ জনপ্রিয় অভিনেত্রী।
বেকাবু, হ্যালো মিনি, অসুরা, বারিশ-এর মতো ছবিতে নিজের অভিনয়ের জাত চিনিয়েছেন দর্শকদের। বর্তমানে বেশ কয়েকটি ওয়েব সিরিজের কাজেও ব্যস্ত আছেন ৩৪ বছর বয়সী এই অভিনেত্রী ।
এমআর//