আন্তর্জাতিক

স্টারলিংক ইন্টারনেট জেলেনস্কির সর্বনাশ ডেকে আনলো!

এবার ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ দখলে মার্কিন অস্ত্র ব্যবহার করতে চাইছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। এজন্য কিয়েভের সঙ্গে দর কষাকষি চলছে ওয়াশিংটনের। ইউক্রেন রাজি না হলে এক্ষেত্রে ব্যবহার করা হবে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় অস্ত্র। আর তা হলো ইলন মাস্কের স্টারলিংক স্যাটালাইট ইন্টারনেট। রাশিয়ার বিরুদ্ধে মানববিহীন নজরদারি ড্রোন চালাতে ইউক্রেনিয় বাহিনীর একমাত্র ভরসা স্টারলিংক ইন্টারনেট।

ইউক্রেনের মোট খনিজ সম্পদের ৫০ ভাগ পেতে কয়েকদিন আগেই দেশটির প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিকে একটি প্রস্তাব দেন মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট। তবে ওই প্রস্তাব প্রত্যাখান করে জেলেনস্কি। এরপরেই ইউক্রেনের সঙ্গে একাধিক বৈঠকে স্টারলিংক ইন্টারনেটের বিষয়টি সামনে আনে ওয়াশিংটন।

এছাড়া গেলো বৃহস্পতিবার জেলেনস্কির সঙ্গে রুদ্ধধার বৈঠক করেন ইউক্রেনে নিযুক্ত মার্কিন বিশেষ দূত কিথ কেলগ। ওই বৈঠকেও জেলেনস্কিকে হুমকি দিয়ে কেলগ বলেন, ইউক্রেন যদি তার খনিজ সম্পদের হস্তান্তরে কোন চুক্তি না করে, তাহলে ওয়াশিংটন খুব শিগগিরিই স্টারলিংক ইন্টারনেটের সংযোগ বন্ধ করে দেবে।

জেলেনস্কিকে হুমকির বিষয়ে জানা আছে এমন একটি সূত্র বলছে, ইলন মাস্কের স্টারলিংক ইন্টারনেট কিয়েভের জন্য অনেকটা অক্সিজেনের মত। স্টারলিংকের সংযোগ হারানো হবে ইউক্রেনের জন্য  সবচেয়ে বড় আঘাত।

ইউক্রেনের জন্য ইলন মাস্কের ইন্টারনেট কতটা গুরুত্বপুর্ণ, এ বিষয়ে দ্য আটলান্টিক কাউন্সিলের সিনিয়র ফেলো মেলিন্ডা হ্যারিং বলেছেন, স্টারলিংকের সংযোগ হারানো মানেই যুদ্ধের মোড় ঘুরে যাওয়া। ড্রোন ও আর্টিলারি শেল ব্যবহারে ইউক্রেন ও রাশিয়া বর্তমানে সমান অবস্থানে আছে। কৌশলগতভাবে ইউক্রেনের জন্য স্টারলিংকের ইন্টারনেট খুবই গুরুত্বপুর্ণ। বিশেষ করে, ইউক্রেনের কাছে নানান ধরনের মানববিহীন ও নজর দারী ড্রোন আছে। যা ব্যবহারে কিয়েভকে স্টারলিংক ইন্টারনেটের ওপর পুরোপুরি নির্ভর করতে হয়।

২০২২ সালে রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে জড়ায় ইউক্রেন। মস্কোর ক্রমাগত হামলায় কিয়েভের যোগাযোগ ব্যবস্থা যখন পুরোটাই ভেঙ্গে যায়, তখন ইউক্রেনে স্টার লিংক ইন্টারনেটের অন্তত হাজার খানেক টার্মিনাল বসায় ইলন মাস্ক।

বৈদ্যুতিকগাড়ির ব্যাটারি নির্মাণের জন্য গুরুত্বপুর্ণ গ্রাফাইট, ইউরেনিয়াম, টাইটেনিয়াম ও লিথিয়ামেরখনিতে ভরপুর ইউক্রেন। গেলো বছরে এসব খনিতে বিনিয়োগের জন্য সামরিক শক্তিতে প্রভাবশালী  ইউরোপের বেশ কয়েকটি  দেশকে আহ্বান জানায় ইউক্রেন। এসব মিত্রদের সমর্থন আদায়ের মাধ্যমে মস্কোকে আলোচনার টেবিলে বসাতে বাধ্য করতে চেয়েছিলো কিয়েভ

এদিকে কিয়েভের সঙ্গে ওয়াশিংটনের চলমান এই দর কষাকষির ব্যাপারে ইউক্রেনে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস, হোয়াইট হাউস ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় কোনো  মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।  তবে শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, ওয়াশিংটন ও কিয়েভের বেশ কিছু দল এই বিষয় নিয়ে কাজ করছে।  খুব শিগগিরই একটি চুক্তি সই হবে।

 

এনএস/ 

 

 

 

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন