তীব্র আপত্তির মুখে ভারতের লোকসভায় ওয়াক্ফ বিল পাস
কয়েক ঘণ্টার বিতর্কের পর মধ্যরাতে ভারতের নিম্নকক্ষ লোকসভায় পাস হয়েছে ওয়াক্ফ (সংশোধন) বিল। বিলটির পক্ষে ভোট পড়ে ২৮৮টি। বিপক্ষে ২৩২। আজ বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) বিলটি উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় পেশ করা হবে। রাজ্য সভায় পাস হলে, আইনে পরিণত করা জন্য বিলটি যাবে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে।
বুধবার লোকসভায় বিল পেশের আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় সরকারের অবস্থানের কথা জানান। এর পরে কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু ‘ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল, ২০২৫’ পেশ করেন । কংগ্রসের নেতৃত্বাধীন বিরোধী দল বিলটিকে অসংবিধানিক ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে বৈষম্য বলে অভিহিত করেছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা বলছে, ওয়াক্ফ বিলের সবচেয়ে বিতর্কিত ধারাগুলোর একটি হলো, এখানে একজন অমুসলিমকে ওয়াক্ফ বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া রাজ্যগুলোর ওয়াক্ফ বোর্ডে নিজ নিজ রাজ্য সরকার অন্তত দুজন অমুসলিমকে নিয়োগ দিতে পারবে। একজন ডিসি বিতর্কিত সম্পত্তিকে ওয়াক্ফ হিসেবে নির্ধারণ বা সরকারের মালিকানায় হস্তান্তর করার ক্ষমতা পাবেন।
উল্লেখ্য, ভারতে ওয়াক্ফ আইন প্রথম পাস করা হয় ১৯৫৪ সালে। ওয়াক্ফ সম্পত্তি হলো সেই স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি, যা আল্লাহর নামে নিবেদিত। পুরোনো আইন অনুযায়ী, কোনো সম্পত্তি ওয়াক্ফ ঘোষণার একমাত্র অধিকারী ছিল ওয়াক্ফ বোর্ড। নতুন বিলে সেই অধিকার দেওয়া হয়েছে জেলা শাসক বা সমপদমর্যাদার কোনো সরকারি কর্মকর্তাকে।
অমুসলিমদের ওয়াক ওয়াক্ফ বোর্ডে রাখার বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, ওয়াক্ফ বোর্ডে অমুসলিমদের রাখা হয়েছে শুধুমাত্র প্রশাসনিক উদ্দেশ্যে, হস্তক্ষেপ করার উদ্দেশ্যে নয়। তারা আইন অনুযায়ী প্রশাসন কাজ করছে কিনা সেটা দেখভাল করবেন।
পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে আইনটি পাসের সমালোচনা করে এক্সে একটি পোস্ট দিয়েছেন বিরোধী দলের নেতা রাহুল গান্ধী। তিনি বলেন, বিলটি ‘একটি অস্ত্র, যার মাধ্যমে মুসলিমদের অবমাননা ও তাদের ব্যক্তিগত আইন ও সম্পত্তিকে দখল করা চেষ্টা। সতর্ক করে রাহুল আরও বলেন, এই বিলের মাধ্যমে আজকে মুসলিমদের লক্ষ্য করা হয়েছে, কিন্ত এটির মাধ্যমে ভবিষ্যতে অন্যান্য সম্প্রদায়ের মানুষকেও লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হতে পারে।
এনএস/