‘মোরাগ করিডোর’ নিয়ন্ত্রণের পর রাফাহ ঘিরে ফেলেছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী

গাজার দক্ষিণাঞ্চলে ইসরাইলি আগ্রাসন আরও তীব্র রূপ নিয়েছে। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) ইসরাইলি সেনাবাহিনী ঘোষণা করেছে, তারা গাজার রাফাহ শহরের প্রবেশপথে নতুনভাবে প্রতিষ্ঠিত ‘মোরাগ করিডোর’ দখল সম্পন্ন করেছে। এর ফলে রাফাহ কার্যত গাজার বাকি অংশ থেকে সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
শনিবার (১২ এপ্রিল) আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এজেন্সির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরাইলি সেনাবাহিনীর দাবি, মোরাগ করিডোরের মাধ্যমে গাজা-মিশর সীমান্ত থেকে খান ইউনিসের উপকণ্ঠ পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকা এখন তাদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
ইসরাইলি সেনাবাহিনী রেডিও উল্লেখ করেছে, সেনাবাহিনী পরবর্তী পর্যায়ে মোরাগ করিডোর এলাকার নিয়ন্ত্রণ স্থিতিশীল করবে এবং রাফার অভ্যন্তরে অগ্রসর হবে যাতে এটিকে তাদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে ‘সীমান্ত বাফার জোন’ করা যায়।
ইসরাইলি সংবাদপত্র হারেৎজ বুধবার জানিয়েছে যে ইসরাইলি সেনাবাহিনী সমগ্র রাফাহকে সীমান্ত বরাবর নির্মিত একটি বাফার জোনে অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা করছে। এলাকাটি ৭৫ বর্গকিলোমিটার (২৯ বর্গমাইল) বা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ জুড়ে রয়েছে।
দক্ষিণে ফিলাডেলফি করিডোর এবং উত্তরে মোরাগ রুটের মাঝামাঝি অবস্থিত এই এলাকাটি ২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরাইলি আক্রমণ শুরু হওয়ার আগে দুই লাখ ফিলিস্তিনি বাস করত।
গেলো ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতি এবং বন্দী বিনিময় চুক্তি ভেঙে ১৮ মার্চ ইসরাইলি সেনাবাহিনী গাজায় নতুন করে আক্রমণ শুরু করে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে ইসরাইলি আগ্রাসনে গাজায় প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ৫১ হাজার ফিলিস্তিনি, যাদের বড় একটি অংশ নারী ও শিশু। টানা সামরিক অভিযানে পুরো ছিটমহলটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে, যা এখন প্রায় বসবাসের অযোগ্য।
এদিকে গাজায় সংঘটিত যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।
পাশাপাশি, গাজায় পরিচালিত অভিযানের কারণে ইসরাইল এখন আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) গণহত্যার মামলার মুখোমুখিও।
এসি//