শেখ হাসিনা ও সন্তানসহ রেহানার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

রাজধানীর পূর্বাচল নিউ টাউন প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে দায়ের করা তিনটি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা এবং শেখ রেহানার দুই মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক ও আজমিনা সিদ্দিকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
রোববার (১৩ এপ্রিল) ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত এই আদেশ দেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে দায়ের করা একই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গ্রহণ করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। টিউলিপ সিদ্দিক অবশ্য তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
এর আগে, ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইলের প্রতিবেদনে বলা হয়, দুর্নীতির অভিযোগে যুক্তরাজ্যের সাবেক নগর মন্ত্রী ও শেখ হাসিনার বোনের মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে আজ রাজধানী ঢাকার মহানগর আদালতে মামলার পর্যালোচনা হবে। ৪২ বছর বয়সী টিউলিপের বিরুদ্ধে গত সপ্তাহে এ মামলার অভিযোগপত্র দেয়া হয়। এসময় টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করতে পারে আদালত।
ব্রিটিশ নাগরিক টিউলিপ সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার বোনের মেয়ে। শেখ হাসিনার পতনের আগে তিনি যুক্তরাজ্যের নগর মন্ত্রী হয়েছিলেন। কিন্তু যুক্তরাজ্যে ফ্ল্যাট সংক্রান্ত দুর্নীতি এবং মিথ্যাচারের অভিযোগে মন্ত্রিত্ব ছাড়তে বাধ্য হন তিনি।
ডেইলি মেইলের প্রতিবেদনে বলা হয়, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলে, টিউলিপ যদি আত্মসমর্পণ না করে তবে বিদেশি কোনো মামলায় পলাতক আসামি হিসেবে বিবেচিত হবেন তিনি। এরপর নিজ ভূমিতে বিচারের জন্য ব্রিটেনের কাছে তাকে ফেরত চাইতে পারে বাংলাদেশ।
রাজধানীর পূর্বাচলে নিজের প্রভাব খাটিয়ে শেখ হাসিনাকে দিয়ে নিজের মা শেখ রেহানা, ভাই রেদওয়ান ববি সিদ্দিক এবং বোন আজমিনা সিদ্দিকের জন্য প্লট বাগিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে টিউলিপের বিরুদ্ধে।
পূর্বাচলে প্লট বাগিয়ে নেয়ার মামলায় এখন পর্যন্ত ১৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়া হয়েছে। যার মধ্যে হাসিনা পরিবারেই ছয় সদস্য রয়েছে। এর আগে, শনিবার টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে দেশটির পার্লামেন্টের কাছে ‘মিথ্যাচার’ করার অভিযোগ উঠে।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ৩ দশমিক ৯ বিলিয়ন ইউরো আত্মসাতের ঘটনায় টিউলিপ সিদ্দিকের নাম উঠে আসার পর তিনি চাপের মুখে পড়েন। এর পরই গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়, টিউলিপ লন্ডনে শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠজনদের দেওয়া একটি ফ্ল্যাটে বসবাস করছিলেন। তবে ২০২২ সালে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল-কে তিনি জানান, ফ্ল্যাটটি ২০০৪ সালে তার বাবা-মা কিনে দিয়েছেন, যা পরে মিথ্যা প্রমাণিত হয়। সত্য উদ্ঘাটিত হওয়ার পর ওই ঘটনার তদন্ত শুরু হলে তিনি মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। সর্বশেষ তার বিরুদ্ধে পূর্বাচলে প্লট বাগিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এসি//