দেশজুড়ে

স্ত্রীর প্রেমিককে ফাঁসাতে বন্ধুর গলা কেটে হত্যা

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ক্লুলেস ট্রাকচালক রাশেদুল হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। স্ত্রীর প্রেমিককে ফাঁসাতে তাঁকে গলা কেটে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছে ডিবি পুলিশ।

সোমবার (২১ এপ্রিল) রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে ডিবি পুলিশ।  দুপুরে গ্রেপ্তারকৃত সেলিম হোসেন হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকরামুল হোসাইন।

আসামি সেলিম হোসেন উপজেলার আশানবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা। তিনি গ্রামের মৃত. সামছুল হোসেনের ছেলে। 

নিহত রাশেদুল ইসলাম (৪০) কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুরের মৃত মজিবর রহমানের ছেলে। বর্তমানে তিনি তাড়াশ পশ্চিম ওয়াপদা বাঁধ এলাকায় বসবাস করতেন।

ওসি ইকরামুল জানান, রোববার (২০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় নিজ গ্রাম থেকে সেলিম হোসেনকে  গ্রেপ্তার করা হয়। আদালতে স্বীকারোক্তি দেওয়ার পর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

তিনি আরও জানান, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি ছুরি, একটি মোবাইল ফোন সেট, একটি মানিব্যাগ, একটি জাতীয় পরিচয় পত্রক্লেমন ও স্পিডের বোতল উদ্ধার করা হয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ জানায়, মো.সেলিম হোসেনের স্ত্রী শেরজা খাতুনের কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর এলাকার আউয়াল নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে পালিয়ে যায়। কিন্তু সেলিমের সঙ্গে তার তালাক হয়নি। সে কারণে সেলিম আউয়ালের উপর প্রতিশোধ নিতে চেয়েছিলেন।

নিহত ট্রাকচালক রাশেদুল ইসলামের সঙ্গে সেলিমের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। সেলিম ঘরের মধ্যে কাগজপত্র খুঁজতে গিয়ে তার স্ত্রী শেরজার ভ্যানেটি ব্যাগে আউয়ালের একটি মানিব্যাগ দেখতে পায়। সেই মানিব্যাগে একটি মোবাইল ফোনের সিমের কাগজ, ছবি (যা শেরজা ও আউয়ালের) এবং আউয়ালের জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি ছিল। পরে মানিব্যাগটি সেলিম তার কাছে রেখে দেন।

প্রায় এক মাস আগে তার মাথায় চিন্তা আসে যে, ট্রাকচালক রাশেদুলকে হত্যা করে মানিব্যাগটি মৃত দেহের পাশে রেখে দিলে পুলিশ সেই মানিব্যাগের ভেতর থেকে জিনিসপত্র দেখে আউয়ালকে সন্দেহ করবে এবং আউয়াল তার স্ত্রী শেরজার সঙ্গে সংসার করতে পারবে না।

এই চিন্তা থেকে আসামী সেলিম ট্রাকচালক রাশেদুলকে হত্যার পরিকল্পনা পরিকল্পনা অনুযায়ী গেলো ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় রাশেদুলকে মদ খাওয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে যান সেলিম। ধানক্ষেতের পূর্ব কিনারে নিয়ে ঘুমের ওষুধ মেশানো স্পিডের বোতল খেতে দেন এবং তিনি ক্লেমনের বোতল নিয়ে মদ খান। কিছুক্ষণ পর রাশেদুল অজ্ঞান হয়ে পড়েন।

এ সময় সেলিম তার কোমরে থাকা ছুরি বের করে রাশেদুলকে জবাই করে হত্যা করে বাড়ি চলে যান। পরেরদিন তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

এমএ//

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন