লাইফস্টাইল

স্বাস্থ্য বদলে দিতে পারে ভিটামিন পি

ছবি: সংগৃহীত

প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাসে আমরা বিভিন্ন রকমের ভিটামিনের কথা প্রায়ই শুনে থাকি , তবে ভিটামিন A, C, D, E আমাদের কাছে বেশ পরিচিত। কিন্তু একেবারে অপরিচিত একটি ভিটামিন উপাদান রয়েছে যা আমাদের সুস্থতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আর সেটি হল ভিটামিন পি।  হয়তো ভিটামিন পি এর নাম কখনো ঐ ভাবে কেউ কখনো শোনেনি , তবে এই উপাদানটি শরীরের জন্য অতন্ত্য কার্যকর।  ভিটামিন পি এমন একটি উপাদান যা স্বাস্থ্য ও ত্বকের গুণগত মানও পাল্টে দিতে পারে।  

ভিটামিন পি   

ভিটামিন পি আসলে কোনো নির্দিষ্ট ভিটামিন নয়।  এটি হল ফ্লাভোনয়েড, যা উদ্ভিদজগতের বিভিন্ন খাবারে পাওয়া যায়।  ১৯৩০ এর দশকে বিজ্ঞানীরা প্রথম এই উপাদান আবিষ্কার করেছিলেন ।  সেসময় এটি ভিটামিন হিসেবে পরিচিতি পায়।  পরবর্তীতে বিজ্ঞানীরা আরও গবেষণা করে বুঝতে পারেন যে , এটি আসলে অন্যান্য ভিটামিনের মতো নয়। কিন্তু ফ্লাভোনয়েডের উপকারিতা এতটাই উল্লেখযোগ্য যে , এই নাম এখন বেশ পরিচিত। 

ফ্লাভোনয়েডের স্বাস্থ্য উপকারিতা  

ফ্লাভোনয়েড বা ভিটামিন পি আমাদের দেহের জন্য একটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শক্তির উৎস।  এটি আমাদের ত্বক ও অভ্যন্তরীণ অঙ্গগুলোকে বয়সজনিত পরিবর্তন থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।  এর মাধ্যমে শরীরের কোষগুলো সুরক্ষিত থাকে , যা প্রদাহ এবং অন্যান্য ক্ষতিকর প্রভাবের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে।

গবেষণায় দেখা গেছে , যারা নিয়মিত ফ্লাভোনয়েড সমৃদ্ধ খাবার খান তাদের হৃদরোগ , ডায়াবেটিস , স্ট্রোক ও উচ্চ রক্তচাপ এর মতো রোগের ঝুঁকি কমে যায়।  এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে , ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করতে ও শরীরের বাড়তি মেদ কমাতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।

ভিটামিন পি নিয়ে এক সময় ভুল ধারণা ছিল।  তবে এখন সঠিকভাবে জানানো হয়েছে যে , এটি কোনো স্বতন্ত্র ভিটামিন নয় বরং , ফ্লাভোনয়েড গ্রুপের একটি উপাদান।  যদিও এটি অন্যান্য ভিটামিনের মতো নয় তারপরও ফ্লাভোনয়েড আমাদের দেহের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।  এটি একটি শক্তিশালী প্রতিরোধী উপাদান , যা শরীরের স্বাভাবিক কার্যক্রমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

ভিটামিন পি বা ফ্লাভোনয়েডের উৎস বেশ সহজলভ্য।  যদি নিয়মিত ফ্লাভোনয়েড সমৃদ্ধ খাবার খান , তবে আপনার শরীর সুস্থ , শক্তিশালী এবং দীর্ঘস্থায়ী থাকবে।  এই উপাদানগুলো পাওয়া যায় যেসব খাবারে : 

১. রঙিন ফলমূল ।  যেমন: বেরি, আপেল, পেঁপে।

২. রঙিন শাকসবজি ।  যেমন: টমেটো, গাজর, শসা। 

৩. টক ফলের খোসা ।  যেমন: কমলা, লেবু।

৪. পুদিনাপাতা , গ্রিন টি , সয়া , জলপাই তেল ইত্যাদি। 

তাছাড়া ফ্লাভোনয়েড সমৃদ্ধ এসব খাবারে ভিটামিন C, E অ্যন্টি-অক্সিডেন্টস, ফাইবার ও খনিজ উপাদান রয়েছে যা দেহের প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়।  ফ্লাভোনয়েড যেহেতু শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী, সেহেতু প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাসে এই উপাদানগুলো অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। এর মাধ্যমে সুস্থ থাকার সাথে  ত্বক ও শরীরের বয়সজনিত পরিবর্তন রোধ করতে পারবেন।  এমনকি যেকোনো ধরনের রোগের ঝুঁকি কমিয়ে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করতে পারবেন।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও গবেষকরা একমত যে , ফ্লাভোনয়েডসমৃদ্ধ খাবার খেলে শুধু শরীরই নয় মস্তিষ্কও ভালো থাকে।  আর তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় এ ধরনের উপাদান রাখতে ভুলবেন না।

এসকে// 

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন