দেশের মধ্যে নেতৃত্বের খোঁজে আওয়ামী লীগ

ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর, দেশের ভেতরে নেতৃত্বের খোঁজে এখন মরিয়া হয়ে উঠেছে আওয়ামী লীগ। নেতৃত্বশূন্য ও সংগঠনের ভঙ্গুর অবস্থার মধ্যেই দলটি আবার রাজনীতির মাঠে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছে।
আওয়ামী লীগের কার্যক্রম এখন মূলত কিছু ঝটিকা মিছিল কিংবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। রাজনীতির মাঠে প্রভাব বিস্তার কিংবা জনগণের মাঝে প্রাসঙ্গিকতা ধরে রাখার মতো দৃশ্যমান কৌশল এখনো তৈরি হয়নি দলটির।
গেলো বছরের আগস্টে গণবিক্ষোভের ফলে দীর্ঘ ১৭ বছরের শাসনের অবসান ঘটে আওয়ামী লীগের। এর পরপরই আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অনেকেই দেশ ছাড়েন। কেউ আশ্রয় নেন ভারতে, কেউবা পশ্চিমা দেশে। এর ফলে দেশের অভ্যন্তরে নেতাকর্মীরা হয়ে পড়েন দিশেহারা।
গ্রেপ্তার আতঙ্ক, মামলা এবং নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে অনেকে আত্মগোপনে চলে যান, কেউ কেউ ধরা পড়েন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে। সেই সময় অধিকাংশ তৃণমূল নেতাকর্মীর কাছে নিজেদের নিরাপত্তা রক্ষাই হয়ে ওঠে প্রথম অগ্রাধিকার।
সরকার পতনের আট মাস পরেও দেশের মাটিতে আওয়ামী লীগের হয়ে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো কেউ সামনে আসেননি। অথচ অনেক প্রবাসী নেতা বলছেন, এখন দলের জন্য প্রয়োজন এমন একজন সাহসী নেতা যিনি প্রকাশ্যে এসে ভাঙা সংগঠনকে নতুন করে দাঁড় করাতে পারবেন।
এ প্রেক্ষাপটে আলোচনায় এসেছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও সাবেক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীর নাম। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে কেউই এখনও কার্যকর ভূমিকা নেওয়ার সাহস দেখাচ্ছেন না।
এদিকে, দলের অভ্যন্তরে আলোচনা হচ্ছে আওয়ামী লীগ এখন ঢাকায় কোনো আনুষ্ঠানিক মুখপাত্রের নাম ঘোষণা করতে চায় না। কারণ, ধারণা করা হচ্ছে যে নামই প্রকাশ্যে আসবে, তাকেই হয়রানি বা গ্রেপ্তারের ঝুঁকির মুখে পড়তে হতে পারে।
দলের নেতারা অভিযোগ করছেন, ঢাকার কেন্দ্র থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পর্যন্ত তাদের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে ধারাবাহিকভাবে।
এই অবস্থায় দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি বলেছেন, ‘যারা সাহস করে সামনে এসে সংগঠনের হাল ধরবেন, তারাই প্রকৃত নেতা হিসেবে বিবেচিত হবেন।’ কিন্তু এখনো পর্যন্ত কেউ সেই সাহসিকতার পরিচয় দেননি।
সূত্র: বিবিসি
এমএ//