কিশোরীর আত্মহত্যার ঘটনায় নতুন মোড়, গ্রেপ্তার ১

বাগেরহাটের মোংলা শহরে কিশোরী (১৪) আত্মহননের ঘটনার ভিন্ন মোড় নিতে শুরু করেছে। প্রাথমিকভাবে পরিবারের সঙ্গে অভিমান করে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে জানা গেলেও। ওই কিশোরীকে ধর্ষণের পর তার ভিডিও ধারণ করে একাধিকবার ধর্ষণের জেরে সে আত্মহত্যা করেছে বলে জানা গেছে।
এ ঘটনার প্রায় চার মাস পর নিহতের বাবা এক নারীসহ তিন জনকে অভিযুক্ত করে বাগেরহাট আদালতে গত ৭ এপ্রিল ধর্ষণ ও আত্মহননে প্ররোচনার দায়ে এজাহার দায়ের করেন। পরে আদালতের নির্দেশে গত ২১ এপ্রিল মোংলা থানা পুলিশ এজাহারটিকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ধর্ষণসহ আত্মহত্যার প্ররোচিত সংক্রান্ত ধারায় মামলা রেকর্ড করেন।মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোংলা থানার ওসি (তদন্ত) মানিক চন্দ্র গাইন গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়,৮ম শ্রেনী পড়ুয়া ওই কিশোরী পড়ালেখার পাশাপাশি ক্রিকেট খেলায় বেশ পারদর্শী ছিল। বিভিন্ন জায়গায় খেলার সূত্র ধরে আসহাবুল ইয়ামিন ও তার কয়েক সহযোগীর সঙ্গে পরিচয় হয়।
কিছু দিন পর আসহাবুল ও তার সহযোগীরা তাকে ফুঁসলিয়ে ট্রলারে করে সুন্দরবনের করমজল পিকনিক স্পষ্টে বেড়াতে নিয়ে যায়। সেখানে নেশা জাতীয় কিছু খাইয়ে আসহাবুল ধর্ষণ করে। এক পর্যায়ে সে দৃশ্য ও নগ্ন ছবি-ভিডিও নিয়ে রাখে। এরপর ব্ল্যাকমেল করতে থাকে।
ভিডিও-ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে। এভাবে দিনকে দিন অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে যেতে থাকে। এক পর্যায়ে গত ১৪ ডিসেম্বর গেলে তাকে এক সহযোগীর মোটরসাইকেলে করে আসহাবুল কাইনমারী এলাকায় একটি কফিশপে ডেকে নেয়। সেখানে কথাবার্তার এক পর্যায়ে ওই কিশোরী তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে আসহাবুল তিরস্কার, লজ্জাজনক ও অপমানমূলক নানা কথাবার্তা বলাসহ তাকে বিয়ে করতে অস্বীকার করে। এতে ঘরে ফিরে ওই কিশোরী আত্মহত্যা করে।
এ ঘটনার পর প্রথমে মোংলা থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করা হয়। পরে নিহতের অভিভাবকরা বিভিন্ন মাধ্যমে এসব ঘটনা জানতে পেরে আসহাবুলসহ তার কয়েক সহযোগীর বিরুদ্ধে বাগেরহাট আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ধর্ষণসহ আত্মহত্যার প্ররোচিত সংক্রান্ত ধারায় এজাহার দাখিল করেন।
পরে পুলিশ এ মামলার প্রধান আসামি আসহাবুল ইয়ামিনকে (২৪) বিশেষ অভিযান চালিয়ে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের মাধবী কলোনি এলাকা থেকে গত ২২ এপ্রিল গ্রেপ্তার করে। আসহাবুলের বাবা সোহেল রানা মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের একটি নৌযানে মাস্টার পদে কর্মরত রয়েছেন।
ওসি (তদন্ত) মানিক চন্দ্র গাইন জানান, আসহাবুল পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সত্যতা ও তার নিজের সম্পৃক্তার কথা স্বীকার করেছে। মামলার অন্য আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশি তৎপরতা চলছে।
আই/এ