বিনোদন

‘একজন ভারতীয় এবং সর্বপরি মুসলিম হিসেবে আমি লজ্জিত’ : হিনা খান

পহেলগাঁও সন্ত্রাসের জেরে ফের নতুন করে অশান্ত ভূস্বর্গ। ঘটনার ৭২ ঘণ্টা পার হলেও এখনও থমথমে কাশ্মীর। সৌন্দর্যের বর্ণনা ভুলে ‘প্রাণহীন’ ভূস্বর্গের বাতাসে এখন শুধুই আতঙ্ক আর হাহাকার। এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতিতেই নিজের জন্মভূমি কাশ্মীরে রয়েছেন হিনা খান। সেখান থেকেই বৈসরণ উপত্যকার ভয়াবহ সন্ত্রাস হামলার প্রতিবাদে সরব হওয়ার পাশাপাশি ‘নতুন কাশ্মীর’ গড়ার ডাক দিলেন ভূমিকন্যা হিনা খান।

পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকায় ভয়ানক সন্ত্রাসবাদের ঘটনায় ফুঁসছে গোটা দেশ। পর্যটকদের নির্বিচারে হত্যা করায় সাম্প্রদায়িক বিভাজন নীতিতে সরগরম নেটপাড়া। নাম-পদবীর জেরে নেটদুনিয়ার স্ক্যানারে মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা! এমন আবহেই ক্যানসারে আক্রান্ত হিনা খান বললেন, ‘একজন ভারতীয় এবং সর্বপরি মুসলিম হিসেবে আমি লজ্জিত।’ ইনস্টা স্টোরিতে অভিনেত্রী লিখেছেন, ‘ভারতের জন্য অন্ধকার দিন। চোখে জল নিয়ে সমবেদনা জানাচ্ছি। বাস্তবটাকে এড়ানো যায় না। মগজধোলাই হওয়া সন্ত্রাসবাদীরা নিজেদের মুসলিম বলে দাবি করে যে অমানবিক আক্রমণ ঘটিয়েছে, তা ভাবনার বাইরে। বন্দুকের নলের মুখে দাঁড় করিয়ে একজন মুসলিমকে যদি তার ধর্ম ত্যাগ করতে বাধ্য করা হয় এবং তারপরও কোনও না কোনওভাবে তাকে হত্যা করা হয়, সেই বিভৎসতা আমার কল্পনাতীত। আমার মন দুমড়ে-মুচড়ে গিয়েছে। ‘একজন মুসলিম হিসেবে আমি আমার সমস্ত হিন্দু ভাইবোন এবং আমার সহ-নাগরিকদের কাছে ক্ষমা চাইছি।’ তিনদিন আগেও চেনা ছন্দে ছিল উত্তর ভারতের এই ‘সৌন্দর্য নগরী’। কিন্তু মঙ্গলবার কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকায় নেমে আসে সাক্ষাৎ যম!

সেই প্রসঙ্গ টেনেই মানসিক যন্ত্রণার কথা তুলে ধরে হিনা খানের সংযোজন, “আমি মানসিকভাবে বিধ্বস্ত। আর এই যন্ত্রণা আমার একার নয়, প্রত্যেকটা ভারতীয়র। এই ঘৃণ্য ঘটনার তীব্র বিরোধিতা করে সকলের শান্তির জন্য কামনা করি। যে বা যারা এমন কাণ্ড ঘটিয়েছে, তাদের মন থেকে ঘৃণা করি আমি। কিছু মুসলিমের কুকীর্তির জন্য আমি এতটাই লজ্জিত যে আমার সহ-নাগরিকদের কাছে অনুরোধ করতে বাধ্য হচ্ছি, আমাদের সকলকে গুলিয়ে ফেলবেন না দয়া করে। এই কঠিন সময়ে আমরা যদি একে-অপরের সঙ্গে লড়াই করতে ব্যস্ত থাকি, তাহলে আমাদের আসল উদ্দেশ্য পূরণ হবে না।’ নিজের মাতৃভূমির কথা মনে করে ক্যানসার আক্রান্ত হিনা জানান, ‘কাশ্মীরের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে একটা পরিবর্তন লক্ষ্য করছি। ওঁদের মনে অখণ্ড ভারতের প্রতি বিশ্বাস এবং আনুগত্য দেখতে পাই। সময় এসেছে সেই কাশ্মীরকে ফিরিয়ে আনার যখন কাশ্মীরি হিন্দু পণ্ডিত এবং কাশ্মীরি মুসলিমরা একসঙ্গে পরিবারের মতো বসবাস করতেন।’

 

জেএইচ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন