সাবেক রাষ্ট্রপতির দেশত্যাগ ঠেকাতে ৩ মাস আগেই এসবিকে চিঠি দেয় জেলা পুলিশ

সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের দেশত্যাগ ঠেকাতে তিন মাস আগে পুলিশের বিশেষ শাখায় (এসবি) আবেদন করেছিল কিশোরগঞ্জ জেলা পুলিশ। একই সঙ্গে বিষয়টি জানানো হয়েছিল ঢাকা মহানগর পুলিশকেও (ডিএমপি)।
শুক্রবার (১০ মে) এ সংক্রান্ত চিঠিটি পেয়েছে বায়ান্ন টিভি।
চিঠি অনুযায়ী, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর কিশোরগঞ্জের ‘হাই প্রোফাইল’ আসামিদের তালিকা করে জেলা পুলিশ। জানুয়ারির শেষদিকে এসবির রাজনৈতিক শাখায় তাদের বিদেশ যাত্রা ঠেকানোর আবেদনটি পাঠানো হয়। এ তালিকায় আবদুল হামিদের নাম ছিল ৩৯ নম্বরে।
এসবিসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগে জানানোর পরও কোনো বাধা ছাড়াই আবদুল হামিদ গত বুধবার রাতে দেশত্যাগ করেন। রাত ৩টার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে ব্যাংককের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন তিনি।
তার সঙ্গে গেছেন ছোট ছেলে রিয়াদ আহমেদ ও শ্যালক ডা. নওশাদ খান। সাবেক এই রাষ্ট্রপতি কূটনৈতিক পাসপোর্ট নিয়েই ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করেন বলে সূত্র জানিয়েছে।
তদন্তের বিষয়ে কমিটির প্রধান অতিরিক্ত আইজি (প্রশাসন) মতিউর রহমান বলেন, কী বিষয়ে তদন্ত করা হবে তার লিস্টিং চলছে। বৃহস্পতিবার রাতেই কমিটি হয়েছে। কোন কোন লেয়ারে, কারা কারা দায়িত্বশীল ছিলেন, কার কী অবহেলা বা দায় রয়েছে, সেটা দেখা হবে।
এদিকে শনিবার সকালে এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, কিশোরগঞ্জ জেলা এসবি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এমন কোন চিঠি পাঠিয়েছিলো কি না তা তার জানা নেই। এ বিষয়গুলো তদন্তের জন্যই তদন্ত কমিটি গঠন করে হয়েছে। দেশত্যাগের ঘটনায় যারা দায়ী তাদের কয়েকজনকে সাসপেন্ড (বরখাস্ত) করা হয়েছে। কাউকে অ্যাটাচ (সংযুক্ত) করা হয়েছে এবং একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবে।
কিশোরগঞ্জ জেলা পুলিশ জানায়, সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে কিশোরগঞ্জ সদর থানায় গত ১৪ জানুয়ারি একটি মামলা হয়েছে। পেনাল কোডের ১৪৩, ৩২৩, ৩২৬, ১১৪, ৩৪ ধারাসহ বিস্ফোরকদ্রব্য আইনের ৩/৪ ধারায় মামলাটি হয়েছে। মামলায় ১২৪ জনের নাম উল্লেখ করা আছে, যেখানে এক নম্বর আসামি শেখ হাসিনা, দ্বিতীয় আসামি শেখ রেহানা এবং তৃতীয় আসামি আবদুল হামিদ। মামলায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাকর্মীদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে ২০০ থেকে ২৫০ জনকে।
এ মামলায় এরই মধ্যে ১১ জন এজাহারভুক্ত আসামি এবং ১৩ জন সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে কিশোরগঞ্জ জেলা পুলিশ।
আই/এ