ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর: ডোনাল্ড ট্রাম্প

অবশেষে যুদ্ধবিরতিতে’ সম্মত হয়েছে চিরবৈরি প্রতিবেশি দেশ ভারত ও পাকিস্তান। চারদিনের পাল্টাপাল্টি হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় শুক্রবার দীর্ঘ রাতব্যাপী আলোচনার পর ভারত ও পাকিস্তান ‘পূর্ণ ও তাৎক্ষণিক’ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। আর এই যুদ্ধবিরতি শনিবার বিকাল ৫টা থেকে কার্যকর হয়েছে।
ভারত-পাকিস্তানের এই যুদ্ধবিরতির বিষয়টি জানিয়েছেন খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শনিবার (১০ মে) সোশ্যাল মিডিয়া ট্রুথ-এ এক পোস্টে তিনি এ তথ্য জানান।
ট্রাম্প তার নিজস্ব মালিকাধীন ট্রুথ সোশ্যাল সাইটে এক পোস্টে লিখেছেন, ‘আমি আনন্দের সাথে ঘোষণা করছি যে ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় দীর্ঘ রাতব্যাপী আলোচনার পর ভারত ও পাকিস্তান একটি পূর্ণ ও তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। ‘এসময় সাধারণ জ্ঞান এবং দুর্দান্ত বুদ্ধিমত্তা’ ব্যবহারের জন্য উভয় দেশকে অভিনন্দন জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
এদিকে, ট্রাম্পের পোস্টের কয়েক মিনিট পরেই ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় উভয় দেশই যুদ্ধবিরতির বিষয়টি নিশ্চিত করে। ভারত জানিয়েছে, শনিবার বিকেল থেকে স্থল, সমুদ্র এবং আকাশ পথে যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
অপরদিকে, পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারও যুদ্ধবিরিতির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, পাকিস্তান কার্যকরভাবে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘পাকিস্তান সর্বদা তার সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতার সাথে আপস না করে এই অঞ্চলে শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়েছে।’
ডোনাল্ড ট্রাম্পের পর ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধবিরতি নিয়ে বলেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। শনিবার এই মার্কিন কূটনীতিকও বলেছেন, ভারত ও পাকিস্তান ‘অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি এবং একটি নিরপেক্ষ জায়গায় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা শুরু করতে রাজি হয়েছে’।
শনিবার (১০ মে) সোশ্যাল মিডিয়া এক্স-এ এক পোস্টে তিনি বলেন, ‘শান্তি প্রতিষ্ঠার পথ বেছে নেয়ায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও শেহবাজ শরীফের প্রজ্ঞা, বিচক্ষণতা ও রাষ্ট্রনায়কত্বের জন্য আমরা তাদের প্রশংসা করি।
মার্কো রুবিও জানান, যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সে সঙ্গে নিয়ে গেলো ৪৮ ঘণ্টা ধরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফসহ দুই দেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে অব্যাহত যোগাযোগ করেছেন।
প্রসঙ্গত, গেলো এপ্রিলের শেষের দিকে ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ পর্যটক নিহত হন। এ হামলার পেছনে পাকিস্তানের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করে ভারত। আর এ হামলার প্রতিশোধ নিতে গেলো বুধবার প্রথম প্রহরে অপারেশন সিঁদুর নামে পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা শুরু করে ভারতীয় সেনাবাহিনী। প্রতিশোধ নিতে পাকিস্তানও পাল্টা হামলা চালায়। আর শুক্রবার রাত থেকেই ভারতের বিরুদ্ধে শুরু করে ‘অপারেশন বুনিয়ান উল মারসুস’ নামে সামরিক অভিযান।
এমআর//