বড় দল হিসেবে বিএনপিকেও অনেক কিছু ছাড় দিতে হবে : তারেক রহমান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলছেন, ৫ ই আগস্ট ফ্যাসিবাদ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় বড় দল বিএনপি। এ কথা শুধু বিএনপি'র নেতা-কর্মীরা নয় বাংলাদেশের সকল জনগন স্বীকার করবে। সংসারের বড় ছেলে হলে অনেক কিছুতে যেমন ছাড় দিতে হয়, তেমনি বড় দল হিসেবে বিএনপিকেও অনেক কিছু ছাড় দিতে হবে। দল হিসেবে বিএনপি'র যেমন আদর্শ আছে, তেমনি অন্যান্য দলগুলোর নিজস্ব আদর্শ আছে।
বুধবার (২ জুলাই) বিকেলে পটুয়াখালী জেলা বিএনপির ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, আদর্শগত মিল না থাকলেও জাতীয় স্বার্থে আমরা সবাই এক। জনগণ সকল ক্ষমতার উৎস। আমাদেরকে জনগণের পাশে যেতে হবে এবং ৩১ দফার বার্তা সকলের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। আপনাদেরকে জনগণের পাশে থাকতে হবে। আপনাদের দ্বারা যেন তাদের কারো কোন ক্ষতি না হয় সে বিষয়ে আপনি যেমন সতর্ক থাকবেন তেমনি আপনার পাশে যেসকল কর্মী আছে তাদেরকে সতর্ক রাখবেন।
তিনি বলেন, মানুষ যখন জানে আপনি বিএনপির নেতা অথবা কর্মী, তখন সাধারণ মানুষের মধ্যে আপনার প্রতি একটি প্রত্যাশা জন্ম নেয়। আমাদের সেই প্রত্যাশার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই চলতে হবে। আমি বিভিন্ন সময়ে বলেছি, জনগণের সঙ্গে থাকুন, জনগণের সঙ্গে থাকুক, জনগণকে সঙ্গে রাখুন। একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমাদের মূল দায়িত্ব হলো জনগণকে খুশি রাখা এবং তাদের সমর্থন ধরে রাখা।
তিনি আরও বলেন, গত এক বছর আগেও এই দিনে স্বৈরাচার আমাদের ঘাড়ের ওপর চেপে বসেছিল। কিন্তু সাধারণ মানুষ সেই স্বৈরাচারকে বিতাড়িত করেছে। কারণ জনগণ যেমন চেয়েছিল, তাদের দল থেকে নেতাকর্মীরা তেমনভাবে কেউ কথা বলেনি, কাজ করেনি। মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ না করায় তাদের আজ এই পরিণতি। তাই আমাদের মূল দায়িত্ব মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ করা।
তারেক রহমান নেতাকর্মীদের সতর্ক করে বলেন, আপনি যদি এলাকায় এমন কোনো কাজ করেন, যা সাধারণ মানুষ প্রত্যাশা করে না, তাহলে তার নেতিবাচক প্রভাব বিএনপির প্রতিটি নেতাকর্মীকেই ভোগ করতে হবে। শহীদ জিয়ার সৈনিক হিসেবে আমরা এমন কোনো কাজ করবো না, যেটা সাধারণ মানুষকে আমাদের ওপর বিরক্ত করে।
বিএনপি'র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বিএনপি গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। দেশের ১২ কোটি ৮০ লক্ষ মানুষ যাদেরকে ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিবে তারাই আগামী দিনে এ দেশকে পরিচালনা করবে।
এর আগে দীর্ঘ ২৩ বছর পর পটুয়াখালী জেলা বিএনপি'র সম্মেলন উদ্বোধন করেন বিএনপি'র কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভাইস চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্সাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান মামুন, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি রাজীব আহসান প্রমুখ ।
এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদলসহ বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীবৃন্দ।
সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশন ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে আলোচনা পর্বে সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুর রশিদ চুন্নু মিয়া এবং সঞ্চালনা করেন সদস্য সচিব স্নেহাংশু সরকার কুট্টি।
এ সম্মেলনে জেলা বিএনপি'র আহবায়ক কমিটির ৩০ জনসহ ৮ টি উপজেলার প্রায় দেড় সহস্রাধিক কাউন্সিলর ও পটুয়াখালী জেলা ও এর বিভিন্ন উপজেলার হাজার হাজার নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সভাপতি, সাধারন সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক এ তিনটি শীর্ষ পদে এক ডজন প্রার্থীর নাম নেতা-কর্মীদের মুখে শোনা যাচ্ছে ।
এ তিনটি পদের মধ্যে সভাপতি পদে যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, তাঁরা হলেন বর্তমান বিএনপি কমিটির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব স্নেহাংশু সরকার কুট্টি ও অন্যতম সদস্য মাকসুদ আহমেদ বায়জীদ (পান্না মিয়া)।
সাধারন সম্পাদক পদে জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য পিপি এ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান টোটন, সদস্য মো. দেলোয়ার হোসেন খান নান্নু, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো. সাইদুর রহমান তালুকদার, জেলা বিএনপির সদস্য জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি বশির আহম্মেদ মৃধা, জেলা যুবদলের সাবেক সাবেক সভাপতি মো. মনিরুল ইসলাম লিটন ও সাধারন সম্পাদক এ্যাড. তৌফিক আলী খান কবির।
সাংগঠনিক সম্পাদক পদে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মো. মশিউর রহমান মিলন, জেলা বিএনপির সদস্য জেলা বাস মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক খন্দকার ইমাম হোসেন নাসির, সাবেক জিএস আলমগীর হোসেন বাচ্চু, মরিচবুনিয়া ইউনিয়ন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক আলহাজ মো. বশির উদ্দিন সিকদার, জেলা মৎস্য দলের সভাপতি ভিপি শাহীন ও জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক এ্যাড. মাকসুদুর রহমান মাকসুদ।
আই/এ