দেশজুড়ে

বসবাস ভারতে, বেতন নেন বাংলাদেশ থেকে

বাংলাদেশের সরকারি কলেজে চাকরি, অথচ বছরের বেশিরভাগ সময় কাটছে ভারতের মাটিতে—সেখানে থেকেই মাস শেষে তোলা হচ্ছে নিয়মিত বেতন! এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার শশিকর শহীদ স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ দুর্লভানন্দ বাড়ৈ ও তার স্ত্রী প্রভাষক চম্পা রানী মন্ডলের বিরুদ্ধে।

জানা গেছে, শিক্ষক দম্পতির বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা নিয়মিত ভারতে অবস্থান করলেও কলেজে অনুপস্থিত থাকার বিষয়টি গোপন রেখে নিয়মিত বেতন-ভাতা তুলছেন। অথচ নিয়ম অনুযায়ী, দীর্ঘ সময় কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকা কোনো সরকারি কর্মচারীর জন্য শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এ শিক্ষক দম্পতি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কল্যাণীতে একটি বাড়ি কিনেছেন এবং সেখানেই দীর্ঘ সময় বসবাস করছেন। 

যদিও অধ্যক্ষ দুর্লভানন্দ বাড়ৈ এসব অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, তার স্ত্রী বর্তমানে মেডিক্যাল ছুটিতে সেখানেই (ভারতে) রয়েছেন। 

দুদফায় তিনি ৬ মাস ছুটি নিয়েছেন এবং সবকিছুই নিয়ম অনুযায়ী চলছে বলে জানান তিনি।

স্থানীয়দের দাবি, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অধ্যক্ষ ও তার স্ত্রী ভারত চলে যান। কিছুদিন পর অধ্যক্ষ দুর্লভানন্দ বাড়ৈ দেশে ফিরলেও তার স্ত্রী এখনো ভারতে অবস্থান করছেন। যাওয়ার আগে চম্পা মন্ডল চেকে স্বাক্ষর করে রেখে যান, যার মাধ্যমে পরবর্তীতে নিয়মিত বেতন-ভাতা উত্তোলন করা হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজের শিক্ষকরা জানান, এ দম্পতি কলেজ গভর্নিং বডি ও প্রশাসনিক মহলের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলে দীর্ঘদিন ধরে অনিয়ম চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের সহযোগিতা করছেন অফিস সহায়ক সজল সরকার।

নবগ্রাম ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও স্থানীয় বাসিন্দা প্রেমান্দ সরকার বলেন, দুর্লভানন্দ বাড়ৈ চাকরি নিয়েছেন অনিয়ম করে। তিনি ভারতের কল্যানীতে বাড়ি করেছেন। সেখানেই তার স্ত্রী সন্তানরা রয়েছে। অথচ বেতন তুলছেন বাংলাদেশে। নাম মাত্র মেডিকেল ছুটি নিয়েছেন। বেসরকারি কলেজে এক মাসের বেশি ছুটি হয় না। অথচ তিনি ছুটি নিয়েছেন ৬ মাসের।

এ বিষয়ে ডাসার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফ-উল আরেফীন বলেন, ‌‌অভিযোগগুলো তদন্ত করে আইন অনুযায়ী প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন