পল্লী চিকিৎসকের ভুল ওষুধে ঝলসে গেল শিশুর শরীর
কুড়িগ্রামের এক পল্লী চিকিৎসকের দেওয়া ওষুধ খাওয়ার পর শরীরের ত্বক ঝলসে গেছে ৯ বছর বয়সী নুরজাহান নামে এক শিশুর। বর্তমানে সে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন।
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার টেপারকুটি গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। গেল ২৯ জুলাই হঠাৎ জ্বরে আক্রান্ত হলে নুরজাহানকে তার বাবা ইউনুস আলী নিয়ে যান বামনডাঙ্গা এলাকার এক স্থানীয় ফার্মেসিতে, যেটি চালান আলমগীর হোসেন নামে এক ব্যক্তি। নিজেকে ‘ডাক্তার’ পরিচয় দেওয়া আলমগীর তিন ধরনের ওষুধ দেন শিশুটিকে। ওষুধ সেবনের পরপরই নুরজাহানের শরীরে ফোঁসকা দেখা দেয়, এবং কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ত্বক উঠে যায়, কালচে হয়ে যায় শরীর।
দুই দিনের ব্যবধানে তার শরীরে মারাত্মক ক্ষত তৈরি হয়। অভিযোগ উঠেছে, এমন ভয়াবহ প্রতিক্রিয়ার পরও আলমগীর শুরুতে চিকিৎসা এড়িয়ে যান। পরে বাধ্য হয়ে ১ আগস্ট শিশুটিকে ভর্তি করা হয় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
নুরজাহানের বাবা বলেন, ‘শুধু জ্বর ছিল মেয়ের। ওই লোকের দেওয়া ওষুধ খাওয়ানোর পরই এমন ভয়ংকর অবস্থা হয়। পরে আলমগীরের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও সে দায় নিতে চায়নি।’
স্থানীয় সূত্র জানায়, আলমগীর হোসেন ‘আল মদিনা’ নামের একটি ফার্মেসি চালান, যার নেই কোনো বৈধ অনুমোদন। তবুও সেখানেই তিনি নানা ধরনের রোগীর চিকিৎসা করে থাকেন। প্রেসক্রিপশনে নিজেকে ‘জেনারেল মেডিসিন প্র্যাকটিশনার’ ও ‘সরকারি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত’ চিকিৎসক বলে উল্লেখ করেন।
এ বিষয়ে আলমগীর দাবি করেন, ‘আমি শুধু সাধারণ কিছু ওষুধ দিয়েছিলাম। হয়তো কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়েছে। তবে আমি ভুল চিকিৎসা দিইনি।’
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকেরা প্রাথমিকভাবে বলছেন, এটি ওষুধজনিত গুরুতর প্রতিক্রিয়া।
কুড়িগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. স্বপন কুমার রায় জানিয়েছেন, ‘ঘটনার তদন্ত চলছে। মেডিকেলের বিশেষজ্ঞ টিম বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এমএ//