সৈকতে ভেসে এলো ডুবে যাওয়া ট্রলারসহ জেলের মরদেহ
পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সৈকতে ভেসে এসেছে ডুবে যাওয়া এফবি সাগরকন্যা নামের একটি মাছ ধরা ট্রলার। ট্রলারের সঙ্গে ভেসে এসেছে নিখোঁজ এক জেলের লাশও। ওই জেলের নাম ইদ্রিস (৫০)। তার বাড়ি কলাপাড়া উপজেলার মধুখালীতে বলে পুলিশ নিশ্চিত করেছে।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) সৈকতের ডিসি পার্ক সংলগ্ন সাগরে ট্রলার ও লাশটি ভাসতে দেখে স্থানীয়রা নৌ-পুলিশ ফাঁড়িতে খবর দেয়। কুয়াকাটা নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বিকাশ মন্ডল বায়ান্ন টিভিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে নৌ পুলিশের একটি টিম লাশটি উদ্ধার করেন। এ সময় লাশের পরনে একটি লাল গেঞ্জি ও কালো প্যান্ট ছিল। লাল গেঞ্জি ও কালো প্যান্ট দেখে লাশের পরিচয় সনাক্ত করেন তার ভাইএর ছেলে সাগর।
নিখোঁজ জেলে ইদ্রিসের ভাইএর ছেল সাগর বলেন, আমিও ২৬ জুলাই ঐদিন এই ট্রলারেই চাচার সাথে ছিলাম। ট্রলারটি ডুবির সাথে সাথে চাচাও ওই সময় ডুবে যায়। এসময় চাচার পরনে লাল গেঞ্জি ও কালো প্যান্ট ছিলো।
গত ২৬ জুলাই সকাল ১০ টার দিকে কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের উপকূল থেকে ৭৫ কি.মি. দূরে শেষ বয়া এলাকায় ট্রলারটি ঢেউয়ের কবলে পরে ডুবে যায়।
এর আগে ২৫ জুলাই মহিপুর থেকে ১৫ জেলে নিয়ে গভীর সমুদ্রে মাছ শিকারের উদ্দেশ্য রওনা দেন ট্রলারটির মাঝি আবদুর রশিদ। ট্রলারটি ডুবে গেলে চারদিন সাগরে ভেসে থাকার পর জীবিত উদ্ধার হয়েছেন ১০ জন। নিখোঁজ ৫ জনের মধ্যে নজরুল ইসলাম নামের এক জনের লাশ গত শুক্রবার ১ আগস্ট কুয়াকাটার মীরা বাড়ি সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর থেকে উদ্ধার করা হয়। এখনো নিখোঁজ রয়েছে ট্রলারের মাঝি আবদুর রশিদ, রফিক সহ ৩ জেলে নিখোঁজ রয়েছে।

জেলেদের ভাষ্য অনুযায়ী, জাল ফেলার কিছু সময় পরই হঠাৎ এক ঝড় ও প্রচণ্ড ঢেউয়ের কবলে পড়ে ট্রলারটি। মুহূর্তেই ট্রলারটি দুমড়ে-মুচড়ে ডুবে যায়। শুরুতেই একজন জেলে ঢেউয়ের তোড়ে নিখোঁজ হন। এরপর বাঁশ ও ফ্লুটের (ভেসে থাকার সরঞ্জাম) সাহায্যে ১৫ জন ভাসতে থাকেন। পরবর্তী সময়ে আরও ৫ জন ঢেউয়ের তোড়ে নিখোঁজ হয়ে যান।
ভেঁসে ভেসে তারা শেষ বয়া সংলগ্ন এলাকায় পৌঁছান। সেখান থেকে সোমবার রাতে দুটি মাছ ধরার ট্রলার ৯ জনকে উদ্ধার করে। মহিপুর মৎস্য বন্দর নিয়ে আসেন। পরে অপর একটি ট্রলারে আরো একজনকে উদ্ধার করে।
কুয়াকাটা নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বিকাশ মন্ডল জানান, কুয়াকাটা ডিসি পার্ক সংলগ্ন সাগরে একটি ট্রলারসহ জেলে লাশ ভাসছে। সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। লাশের পরনে একটি লাল গেঞ্জি ও কালো প্যান্ট রয়েছে। গেঞ্জি প্যান্ট দেখে তার ভাতিজা সাগর তার চাচা ইদ্রিসের লাশের বলে দাবী করেন। লাশে সুরহাতাল শেষে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আই/এ