সুস্থ শরীর ও মন ধরে রাখার সেরা উপায় দুপুরের ঘুম
বর্তমানে প্রতিদিনের কাজের চাপ ও শারীরিক ক্লান্তির কারণে অনেকেই দিনের বেলায় একটু বিশ্রাম নেন। বিশেষ করে যারা দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করেন কিংবা রাত জাগেন, তাদের জন্য দুপুরের ঘুম একটি প্রয়োজনীয় অভ্যাস হয়ে উঠেছে। তবে সঠিকভাবে দুপুরে ঘুমানো কিভাবে আমাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হতে পারে তা কি জানেন? দুপুরের ঘুমের বিভিন্ন দিক নিয়ে চলুন জেনে নেয়া যাক।
ঘুমের উপকারিতা :
মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি
দুপুরে ২০ মিনিটের ঘুম মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এটি মনোযোগ, স্মৃতি, এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা উন্নত করে। গবেষণা দেখিয়েছে যে, অল্প সময়ের ঘুম মস্তিষ্কে নতুন তথ্য শোষণের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
শক্তি পুনরুদ্ধার
ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাজের চাপ, পড়াশোনা কিংবা টানা দৌড়ঝাঁপের পর আমাদের শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়ে। দুপুরের ঘুম শরীরের শক্তি পুনরুদ্ধারে সহায়ক। এটি আপনাকে দ্রুত সতেজ করে তোলে এবং বাকি দিনের জন্য শক্তি প্রদান করে।
মানসিক চাপ কমায়
দুপুরে একটু বিশ্রাম আমাদের মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। এটি স্ট্রেস হরমোন কোর্টিসলের মাত্রা কমাতে পারে এবং মন শান্ত রাখতে সাহায্য করে। নিয়মিত দুপুরের ঘুমের মাধ্যমে উদ্বেগ এবং হতাশার ঝুঁকি হ্রাস পায়।
হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত দুপুরে ঘুমান, তাদের হৃদরোগের ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে কম। দুপুরের ঘুম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে এবং হৃদপিণ্ডের জন্য উপকারী হতে পারে।
ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা
অন্যদিকে, দুপুরের ঘুম শরীরের মেটাবোলিজম স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে। যখন আমাদের শরীর সঠিক পরিমাণে বিশ্রাম পায়, তখন হরমোনের ভারসাম্য বজায় থাকে, যা পরবর্তী সময়ে অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমায় এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
ঘুমের সময় এবং পরিমাণ :
সঠিক সময়:
দুপুরের ঘুমের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত সময় হল ১টা থেকে ৩টা। এই সময়টি শরীরের স্বাভাবিক ঘুম চক্রের সাথে মিল থাকে যা ঘুমের গুণগত মান বাড়ায়।
ঘুমের পরিমাণ:
অতিরিক্ত ঘুম বা কম ঘুম উভয়ই শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই সবচেয়ে ভালো হলো ১০-২০ মিনিটের মাঝারি ঘুম। অতিরিক্ত ঘুম বিশেষ করে ৩০ মিনিটের বেশি, রাতে ঘুমে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
সতর্কতা :
• নিয়মিত ঘুমের সময় রুটিন: দুপুরের ঘুম রাতে ঘুমকে প্রভাবিত না করে, সেই অনুযায়ী সময় নিয়ন্ত্রণ করা উচিত। যদি রাতে ঘুম না আসে তবে দুপুরে ঘুমানোর অভ্যাস ক্ষতিকর হতে পারে।
• পরিমিত ঘুম: যে ব্যক্তিরা অতিরিক্ত দুপুরে ঘুমান, তাদের রাতে ঘুমের পরিমাণ কম হতে পারে যা শারীরিক স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করতে পারে। তাই সঠিক পরিমাণে ঘুমানোই ভালো।
দুপুরের ঘুম শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের শক্তি বৃদ্ধি, মানসিক চাপ কমানো, স্মৃতিশক্তি উন্নত করা এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক। তবে ঘুমের সময় এবং পরিমাণে সতর্ক থাকা জরুরি। পরিমিত এবং সঠিক সময়ে ঘুমানোই আপনার জন্য সবচেয়ে উপকারী।
এসকে//