চলন্ত বাসে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের চেষ্টা, গ্রেপ্তার ২
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) নৃবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে চলন্ত বাসে হাত পা বেঁধে ‘ধর্ষণচেষ্টার’ ঘটনায় দুই জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার হোসেন আলী (২৫) ও আলী হোসেনকে (২৩) অজামিনযোগ্য দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ ঘটনায় পিচ্চি রাসেল (৩২),নূর আলম,সৌরভ নামে তিনজন পলাতক রয়েছে।
শুক্রবার (২২ আগস্ট) সকাল ৯টার দিকে সেন্টমার্টিন পরিবহন নামের একটি বাসে এই ঘটনা ঘটে। কুমিল্লা জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খাঁন গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ভুক্তভোগীর বরাত দিয়ে শিক্ষার্থীরা জানান, শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে ঢাকার উদ্দেশে কোটবাড়ি বিশ্বরোড থেকে সেন্টমার্টিন বাসে ওঠেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা। বাসটি পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড থেকে ইউটার্ন নেওয়ার কথা বলা থাকলেও ওই ছাত্রীকে নিয়ে বাসটি চৌদ্দগ্রামের দিকে চলে যায়।
তখন বাসে ছিল চালক, হেল্পারসহ আরও তিন জন। বাসে একা পেয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর গলায় ছুরি ধরে গহনা, টাকা-পয়সা নিয়ে নেয় ও ধর্ষণের চেষ্টা করে। তখন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর হাতে কামড় দেন অভিযুক্তরা। এরপর শিক্ষার্থীকে হাত-পা বেঁধে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করা হলে সেই শিক্ষার্থীর অনুরোধে ফেলে না দিয়ে শাকিল আবাসিক হোটেল নামক হোটেলে নিয়ে আসে।
এসময় পদুয়ার বাজারের স্থানীয় এক ব্যক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের খবর দিলে শিক্ষার্থীরা গিয়ে ভুক্তভোগীর হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করে এবং বাসে থাকা দুই জনকে আটক করে। এ সময় জড়িত অন্য তিন জন পালিয়ে যান।
ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা ৯৯৯ ফোন দিলে পুলিশ আসে। এসময়ে শিক্ষার্থীরা বাস মালিক এবং অভিযুক্ত বাকি দুই জনকে ক্যাম্পাসে নিয়ে আসার জন্য দাবি জানায়। পুলিশ শিক্ষার্থীদের দাবি মানতে অস্বীকৃতি জানালে দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের দাবি না মানায় ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি ঠান্ডা করার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়।
পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা আলোচনায় এলে ভ্রাম্যমাণ আদালতে অভিযুক্তদের দুই বছর কারাদণ্ড দেয়। ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা সেন্টমার্টিন পরিবহনের দুটি বাস জব্দ করে ক্যাম্পাসে নিয়ে এসেছে।
কুমিল্লা সদর দক্ষিণের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবাইয়া খানম বলেন, শিক্ষার্থীদের এসেই আমি প্রস্তাব দিয়েছিলাম মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে সাজা দেওয়ার বিষয়ে। শিক্ষার্থীরা শুরুতে আমার কথায় কর্ণপাত করেনি। অবশেষে শিক্ষার্থীরা বিষয়টি মেনে নিয়েছে।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মামলা দায়েরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আই/এ