বুধবার থেকে ভারতীয় পণ্যে ৫০ শতাংশ মার্কিন শুল্ক কার্যকর হচ্ছে
ভারতের জন্য বুধবার থেকে কার্যকর হচ্ছে ৫০ শতাংশ মার্কিন শুল্ক। অনেকটা অগ্নিপরীক্ষায় ভারত। যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি এক বার্তায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। মার্কিন এই শুল্কের চাপে ভারতীয় ব্যবসা বাণিজ্যে দেখা দিতে পারে অস্থিরতা।
নতুন মার্কিন শুল্কে ভারতের অর্থনীতি কতটা চাপে পড়তে পারে, তার একটি ধারণা দিয়েছেন ভারতের ইঞ্জিনিয়ারিং এক্সপোর্টস প্রমোশন কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট পংকজ চাড্ডা। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের বার্ষিক ৮৭ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানির ৫৫ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। পাশাপাশি ভিয়েতনাম, বাংলাদেশ ও চীনের মত দেশগুলো লাভবান হবে। মার্কিন ক্রেতারা ইতিমধ্যে নতুন অর্ডার বন্ধ করে দিয়েছে। আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে রপ্তানি ২০ থেকে ৩০ শতাংশে নেমে আসবে।
চাড্ডা আরও জানান, সরকার ব্যাংক ঋণ ও বিকল্প বাজার খোজার প্রতিশ্রতি দিয়েছেন। তবে রপ্তানিকারকেরা এসবে খুব বেশি লাভ দেখছে না। মার্কিন শুল্কের কারণে ভারতের ডায়মণ্ড শিল্প ইতোমধ্যে বড় ধাক্কা খেয়েছে।
বুধবার থেকে কার্যকর হওয়া মার্কিন শুল্ক নিয়ে মন্তব্য জানতে ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। মন্ত্রণালয় কোন জবাব দেয়নি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেছেন, আপাতত মার্কিন শুল্ক কমার কোন সম্ভাবনা নেই। রপ্তানিকারদের আর্থিক সহায়তা দেয়া হবে। লাতিন আমেরিকা, চীন, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিকল্প বাজার খোঁজার চেষ্টা করছে সরকার। ইতোমধ্যে ৫০টি দেশ চিহ্নিত করা হয়েছে।
ভারতের ওই বাণিজ্য কর্মকর্তা আরও জানান, টেক্সটাইল, প্রক্রিয়াজাতকরণ খাদ্য, চামড়ার পণ্য ও সামুদ্রিক পণ্য রপ্তানির জন্য সরকার ৫০ দেশ চিহ্নিত করেছে।
মার্কিন এই চড়া শুল্কের নেপথ্যে রুশ তেল কেনা। সেই পদক্ষেপ থেকে এখনো সরে আসেনি নয়া দিল্লি। ভারতের তেল পরিশোধন প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধে সরকারের কাছ থেকে কোন ধরনের নির্দেশনা এখনো তারা পায়নি। আর যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয় শঙ্কর বলেছেন, চীন ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখনো রাশিয়া থেকে তেল কিনছে। শুধুমাত্র ভারতকে দোষারোপ করাটা অন্যায়।
আর কিছু দিন আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অনেকটা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, চড়া মুল্য দিতে হলেও, দেশীয় কৃষকদের স্বার্থ নিয়ে সরকার বিন্দুমাত্র আপোস করবে না। আর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যিক টানাপোড়নের মধ্যে চীন সফরে যাচ্ছেন মোদি। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আকস্মিক চীন সফরকে একটি উঁচুমানের কৌশল হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, মোদির এই পদক্ষেপের পেছনে যে ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক আছে, সেটা কারোরই চোখ এড়িয়ে যাওয়ার কোনো কারণ নেই।
এনএস/