লাইফস্টাইল

ঐতিহ্যের স্বাদ নাকি স্বাস্থ্যঝুঁকি পান্তা ভাত

বাংলাদেশে পান্তা ভাত শুধু সকালের খাবার নয়, এটি ঐতিহ্যবাহী প্রাকৃতিক খাবারের অংশ। বর্ষা বা গরমের সকালে হালকা পান্তা ভাত শরীরকে সতেজ রাখে। তবে চিকিৎসা ও পুষ্টিবিজ্ঞানের দিক থেকে, সঠিকভাবে প্রস্তুত ও সংরক্ষণ না করলে এটি স্বাস্থ্যঝুঁকিও তৈরি করতে পারে।

স্বাস্থ্যগত উপকারিতা

হজমে সহায়ক: 

রাতের বেলায় পানি দিয়ে ভিজানো ভাত হালকা হয়ে হজম সহজ করে, পেটে গ্যাস বা ভারী ভাব কমায়।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ:

ধীরে হজম হওয়ায় রক্তে শর্করার ওঠানামা কমে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য তুলনামূলকভাবে নিরাপদ। (সূত্র: Harvard T.H. Chan School of Public Health)

প্রোবায়োটিক বৃদ্ধি:

ভিজানো ভাতে প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি পেতে পারে, যা পেটের স্বাস্থ্য ও হজম প্রক্রিয়াকে সহায়তা করে।

প্রাকৃতিক এনার্জি: 

হালকা পান্তা ভাত শরীরকে সতেজ রাখে এবং সহজে শক্তি যোগ করে।

সম্ভাব্য ঝুঁকি

যদিও পান্তা ভাত স্বাস্থ্যকর হতে পারে, অসাবধানতা বা দূষিত পরিবেশে সংরক্ষণ করলে তা বিপজ্জনক:

ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি: 

পানি বা অস্বচ্ছ পাত্রে দীর্ঘ সময় রাখা হলে হানিকারক ব্যাকটেরিয়া জন্ম নিতে পারে।

ফুড পয়জনিং: 

সংক্রমিত পান্তা ভাত খেলে বমি, ডায়রিয়া, পেটব্যথা হতে পারে।

অতিরিক্ত লবণ ও মাছ: 

বেশি লবণ বা প্রোটিন মিশালে কোলেস্টেরল ও রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে।

শিশু ও বয়স্কদের ঝুঁকি: 

সংক্রমণের সম্ভাবনা এদের জন্য বেশি। (সূত্র: Mayo Clinic)

পান্তা ভাত খাওয়ার নিয়ম

• পরিষ্কার ও ঢেকে রাখা ভাত ব্যবহার করুন।

• সকালে খাওয়া উচিত, দীর্ঘ সময় পানি থাকলে ঝুঁকি বাড়ে।

• অতিরিক্ত লবণ বা সংরক্ষিত উপকরণ এড়িয়ে চলুন।

• শিশু, বয়স্ক ও রোগীদের জন্য বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করুন।

পুষ্টিবিজ্ঞানীরা বলছেন, সঠিকভাবে সংরক্ষণ ও পরিমিতভাবে খেলে পান্তা ভাত স্বাস্থ্যকর। এটি হজম সহজ করে, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং প্রোবায়োটিক উপাদান পেটের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। তবে পরিচ্ছন্নতা না মেনে বা দূষিত পানি ব্যবহার করলে ফুড পয়জনিং ও অন্যান্য ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। পান্তা ভাত পুষ্টিকর ও ঐতিহ্যবাহী খাবার যা সঠিকভাবে প্রস্তুত ও সংরক্ষণ করলে স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। 

এসকে// 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন