দেশজুড়ে

‘ঋণের দায়ে’ ৪ জনের মৃত্যু, আবার ঋণ নিয়েই কুলখানি

ঋণের দায়ে আত্মহত্যাকরেছিলেন মিনারুল ইসলাম। আত্মহত্যার আগে স্ত্রী মনিরা খাতুন, ছেলে মাহিম ও মেয়ে মিথিলাকে হত্যা করেন। সেই মিনারুলের বাড়িতেই আবার ঋণ করে হলো ১২০০ মানুষের কুলখানির আয়োজন।

শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজশাহীর পবা উপজেলায় তাদের গ্রামের বাড়ি বামনশিকড়ে এ আয়োজন করা হয়। চল্লিশায় প্রায় এক হাজার ২০০ মানুষকে মুড়িঘণ্ট দিয়ে ভাত খাওয়ানো হয়েছে।

জানা যায়,  গত ১৫ আগস্ট নিজ বাড়ি থেকে মিনারুল ইসলাম (৩৫), তার স্ত্রী মনিরা খাতুন (৩০), ছেলে মাহিম (১৪) ও মেয়ে মিথিলার (৩) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।  মিনারুল কৃষিকাজ করতেন। লাশের পাশে চিরকুট পাওয়া যায়, যাতে মিনারুল তার স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হত্যার কথা স্বীকার করেন।

ওই চিরকুটে মিনারুল লিখেছিলেন, ‌‘আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে। এত কষ্ট আর মেনে নিতে পারছি না। তাই আমাদের বেঁচে থাকার চেয়ে মরে গেলাম, সেই ভালো হলো। কারও কাছে কিছু চাইতে হবে না।

এ আয়োজনের বিষয়ে মিনারুলের বাবা রুস্তম আলী বলেন, বাপ-দাদার আমল থেকেই দেখে আসছি। আমিও মনের আবেগে করলাম। যে যার সামর্থ্য অনুযায়ী করে। আমি গরিব মানুষ, মাংস করতে পারিনি। মাছ দিয়ে মুড়িঘণ্ট আর ডাল করেছি। আশপাশের মানুষজন বলছিল, চার জনের মরার কারণে বাড়ি ভারী ভারী লাগছে। ছোট ছিলেপিলেরা ভয় পাচ্ছিল। অনুষ্ঠানটা করলাম যাতে ভয় ভাঙে। বাড়ি যেন পাতলা হয়। দুপুরে দোয়া হয়েছে। তারপর খাওয়াদাওয়া। প্রায় এক লাখ টাকা খরচ হলো। আত্মীয়-স্বজন ও সমাজের মিলিয়ে ১ হাজার ২০০ মানুষের আয়োজন করা হয়েছিল।

টাকা জোগাড় হলো কীভাবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সবই ধারদেনা। আমার তো জমানো টাকা নেই।

শোধ করার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘১৫-১৬ কাঠা জমি আছে। এক কাঠা বেচবো, বেচে ধার শোধ করবো। তা ছাড়া তো আর কোনও উপায় নেই।

 

আই/এ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন