পাকিস্তান শেষ হয়ে গেছে, আবার পাকিস্তান হবে না : টুকু
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেছেন, “পাকিস্তানের মৃত্যু হয়ে গেছে, বাংলাদেশ আর কখনও পাকিস্তান হবে না।”
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) দুপুরে সিরাজগঞ্জ শহরের রেলগেট এলাকায় শহর বিএনপির আওতাধীন ১, ১০, ১১, ১২, ১৩, ১৪ ও ১৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
টুকু বলেন, একাত্তরে যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে, পাকিস্তানি বাহিনীর সহযোগী হয়ে বুদ্ধিজীবী হত্যা করেছে—আজ তারা আবার ইতিহাস বিকৃতির অপচেষ্টা করছে। তারা বলছে, ভারত ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি করে বাংলাদেশকে পাকিস্তান থেকে আলাদা করেছে। টুকু বলেন, “এটা ভুল ধারণা। বাস্তবতা হলো, পাকিস্তান নিজেই আমাদের শোষণ করেছে, বাংলার মানুষকে বঞ্চিত করেছে। তাই বাঙালিরা ৭০-এর নির্বাচনে শেখ মুজিবুর রহমানকে ভোট দিয়ে স্বাধীনতার পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল।”
তিনি বলেন, “১৯৫৮ সালে পাকিস্তান নিজেদের ইসলামিক রিপাবলিক ঘোষণা করে ইসলামকে হাতিয়ার বানায়। তখনই বাংলার মানুষ বুঝে যায় তেলে আর জলে মেশার নয়। পাকিস্তান আমাদের অর্থ নিয়ে পশ্চিম পাকিস্তান গড়েছে। এর প্রতিবাদে বাংলার মানুষ আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছিল।”
জামায়াতে ইসলামীর সমালোচনা করে তিনি আরও বলেন, “ভোট দিলে পাল্লায় যাবে, আল্লায় পাবে—এমন বিভ্রান্তিকর স্লোগান দিয়ে গ্রামীণ মানুষকে ভুল পথে চালানো হয়েছে। আসলে কারও নামাজ, রোজা বা ইবাদত তার নিজের, এর মাধ্যমেই আল্লাহর সন্তুষ্টি পাওয়া যায়। মিডিয়েটর হয়ে কারও কাছে আল্লাহর পথে যাওয়ার সুযোগ নেই।”
সাবেক এ প্রতিমন্ত্রী অভিযোগ করেন, “গত ১৬ বছরের আন্দোলনে জামায়াত ছিল না। বরং তারা আওয়ামী লীগের ভেতরে গিয়ে সুবিধা নিয়েছে। আমাদের ছাত্রদল ক্যাম্পাসে ঢুকতে না পারলেও তারা ছাত্রলীগে ঢুকে টিকে ছিল। আজ আবার নতুন রূপে ফিরে আসতে চাইছে। কিন্তু এই ছলনার রাজনীতি টিকবে না।”
তিনি আরও বলেন, “যারা একাত্তরে আলবদর-আলশামস গঠন করে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছিল, আজ তারাই শহীদ বুদ্ধিজীবী বধ্যভূমিতে গিয়ে রবীন্দ্রসঙ্গীত গায়। এ এক ভয়াবহ ভণ্ডামি। হত্যার জন্য ক্ষমা না চেয়ে তারা শহীদদের নামে মঞ্চ সাজাচ্ছে।”
সভায় সভাপতিত্ব করেন সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি সেলিম ভুইয়া। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুন্সী জাহেদ আলম।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু।
এছাড়া বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি নাজমুল হাসান তালুকদার রানা, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মুরাদুজ্জামান মুরাদ ও স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল কায়েস প্রমুখ।
আই/এ