আন্তর্জাতিক

রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মোদী: ট্রাম্প

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। বুধবার (১৫ অক্টোবর ) এই তথ্য জানিয়েছেন,  মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে চীনকেও একই কাজ করতে রাজি করানোর চেষ্টা করবেন ট্রাম্প। মস্কোর জ্বালানি আয়ের উৎস বন্ধ করার প্রচেষ্টা জোরদারের অংশ হিসাবে ওয়াশিংটন এমন উদ্যোগ নিচ্ছে। 

রাশিয়ার সমুদ্রপথে তেল রপ্তানির দুটি বৃহত্তম ক্রেতা দেশ-ভারত ও চীন। ইউক্রেন আক্রমণের কারণে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে মস্কোর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এ কারণে ইউরোপীয় ক্রেতারা রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ করে দেয়। তখন রাশিয়া কম দামে তেল বিক্রি করতে বাধ্য হয়। এই সুযোগ নিচ্ছে ভারত ও চীন।

সম্প্রতি রাশিয়ার তেল কেনার কারণে ভারতকে লক্ষ্যবস্তু করেছেন ট্রাম্প। তিনি রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল কেনা নিরুৎসাহিত করতে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের রপ্তানির ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপ করেন। মস্কোর ওপর চাপ সৃষ্টি করে মস্কোকে ইউক্রেন যুদ্ধে শান্তিচুক্তির পথে আনতে বাধ্য করতেই এমন উদ্যোগ নিয়েছেন ট্রাম্প।

ট্রাম্প হোয়াইট হাউসের সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘রাশিয়া থেকে ভারত তেল কিনছে, এতে তিনি খুশি ছিলেন না। আজ মোদি তাকে আশ্বস্ত করেছেন তাঁরা আর রাশিয়ার তেল কিনবেন না।’

ট্রাম্প আরো বলেন, ‘এটি একটি বড় পদক্ষেপ। এখন তারা চীনকেও একই কাজ করতে রাজি করাবেন।’ মোদির এমন প্রতিশ্রুতি সম্পর্কে ওয়াশিংটনে ভারতীয় দূতাবাসের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য জানানো হয়নি।

রাশিয়া বর্তমানে ভারতের প্রধান তেল সরবরাহকারী দেশ। গেল সেপ্টেম্বর মাসে মস্কো প্রতিদিন প্রায় ১৬ লাখ ২০ হাজার ব্যারেল তেল ভারতে রপ্তানি করেছে। এই পরিমাণ ভারতের মোট তেল আমদানির প্রায় তিন ভাগের এক ভাগ। দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে যুক্তরাষ্ট্রের চাপের পরও রাশিয়ান তেল কিনছে ভারত। অন্য দেশ থেকে তেল আনলে ভারতের খরচ বাড়তে পারে। এ কারণে ভারতীয় কর্মকর্তারা মনে করেন, এই কেনাকাটাকে দেশের জ্বালানি নিরাপত্তার জন্য অপরিহার্য। 

ভারত রাশিয়ান তেল কেনা বন্ধ করলে মস্কোর অন্যতম বড় জ্বালানি ক্রেতার নীতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন হবে। ভারতের এমন সিদ্ধান্ত অন্যান্য দেশগুলোকেও রুশ তেল কেনা পুনর্বিবেচনা করার বিষয়ে প্রভাবিত করতে পারে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দেশটিতে নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূত সার্জিও গোরের সাক্ষাতের কয়েক দিন পরেই ট্রাম্প এমন ঘোষণা দিলেন।  ওই সাক্ষাতে প্রতিরক্ষা, বাণিজ্য ও প্রযুক্তি নিয়ে আলোচনা হয়। ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত গোর। তার নিয়োগকে যুক্তরাষ্ট্র-ভারত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের জন্য ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

এদিকে গতকাল বুধবার মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেছেন, ওয়াশিংটনে এক বৈঠকে তিনি জাপানের অর্থমন্ত্রী কাটসুনোবু কাতোকে জানিয়েছেন, ট্রাম্প প্রশাসন আশা করছে, জাপানও রাশিয়া থেকে জ্বালানি কেনা বন্ধ করবে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন