৫ বছরের সাজাভোগ করতে কারাগারে গেলেন ফ্রান্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট
ফ্রান্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট নিকোলা সারকোজি আজ মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) থেকে পাঁচ বছরের কারাভোগ শুরু করছেন। ২০০৭ সালের নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর জন্য কূটনৈতিক সুবিধার বিনিময়ে লিবিয়া থেকে অর্থ নেয়ার অভিযোগে গত মাসে (সেপ্টেম্বর) সারকোজিকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এই প্রথমবারের মতো আধুনিক ফ্রান্সের ইতিহাসে কোনো সাবেক রাষ্ট্রপ্রধান কারাগারে গেলেন।
ফরাসি পত্রিকা লা ট্রিবিউন দিমাঞ্চের এক প্রতিবেদনে তিনি বলেছেন, ‘আমি কারাগারকে ভয় পাই না। কারাগারের ফটকেও আমি মাথা উঁচু রাখব।’
আজ সকালে নিজ বাসা থেকে বের হওয়ার সময় সমর্থকদের উদ্দেশ্যে হাত নেড়ে শেষবারের মতো বিদায় জানান সারকোজি। এরপর স্থানীয় পুলিশের মোটরসাইকেল ও গাড়ির ঘেরাটোপে থাকা তার বহরটি দক্ষিণ প্যারিসের 'লা সান্তে' কারাগারের উদ্দেশে রওনা হয়।
অবশ্য ২০১২ সাল থেকেই ক্ষমতা ছাড়ার পর তার উপর আরোপিত অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিলেন। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল প্রক্রিয়া চলাকালে তাকে কারাগারের একক সেলে যা 'ভিআইপি উইং' নামে পরিচিত সেখানে রাখা হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
সাধারণত, যেসব বন্দিকে অন্যান্য সাধারণ কয়েদিদের সঙ্গে রাখা অনিরাপদ মনে করা হয়, তাদেরকই এই বিশেষ কারাকক্ষে এ রাখা হয়। সিএনএনের সহযোগী প্রতিষ্ঠান বিএফএমটিভি জানিয়েছে, রাজনীতিবিদ, সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা, উগ্র-ডানপন্থী সংগঠনের সদস্য বা ইসলামপন্থী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে জড়িতদের এখানে রাখা হয়তিনি কারাগারে যাওয়ার আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম 'এক্স'-এ (পূর্বে টুইটার) দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেন, 'আমি একজন নির্দোষ মানুষ।'
তিনি আরও লিখেছেন, 'আমি যখন লা সান্তে কারাগারের চার দেয়ালের ভেতরে প্রবেশের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি, এখন আমার চিন্তা শুধু ফ্রান্সের জনগণকে ঘিরে, যারা ভিন্ন ভিন্ন জীবনধারা ও মতের অনুসারী।'
সাবেক এই প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, 'আজ সকালে কারাগারে প্রবেশ করছে কোনো প্রজাতন্ত্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট নয়, বরং এক নির্দোষ মানুষ।'
তিনি বিচার প্রক্রিয়াকে 'বিচারিক কেলেঙ্কারি' আখ্যা দিয়ে বলেন, 'আমি এই অবিচারের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাব। তবে আমার প্রতি সহানুভূতি দেখানোর প্রয়োজন নেই, কারণ আমার পাশে আছে স্ত্রী, সন্তান ও অসংখ্য বন্ধু।'
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সকালে তিনি আরও বলেন, 'আজ আমি ফ্রান্সের জন্য গভীর বেদনা অনুভব করছি। একটি দেশ, যা প্রতিহিংসার এমন এক প্রকাশে অপমানিত হচ্ছে, যা আগে কখনও দেখা যায়নি।'
সুূত্র: বিবিসি
এসএইচ//