জাতীয়

দেশকে বাঁচাতে জাতীয় ঐক্য ধরে রাখতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা

ফ্যাসিবাদকে পরাস্ত করতে এবং দেশকে বাঁচাতে হলে জাতীয় ঐক্য ধরে রাখা ছাড়া বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শনিবার (০১ নভেম্বর) রাতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ আহ্বান জানান।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের সকলের মনে রাখতে হবে, যে অভূতপূর্ব ঐক্য আমাদের মাঝে রয়েছে রাষ্ট্র সংস্কারে—এই জাতীয় ঐক্য আমাদের ধরে রাখতেই হবে। কারণ, ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠী এ জাতিকে বিভক্ত করতে সর্বশক্তি নিয়োজিত করেছে।”

তিনি আরও বলেন, “গেল ১৫ মাস আমরা তাদের নানা ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করেছি। ফ্যাসিবাদকে পরাস্ত করতে হলে, এই দেশকে বাঁচাতে হলে জাতীয় ঐক্য ধরে রাখা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নাই।”

ড. ইউনূস বলেন, “এ দেশের ভবিষ্যৎ নির্মাণে আমাদের সামনে মহা চ্যালেঞ্জ আছে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা কোনো একক ব্যক্তি, সংগঠন, সংস্থা বা সরকার দিয়ে সম্ভব নয়। এজন্য সব রাজনৈতিক দল ও পক্ষের মধ্যে ঐক্য থাকতে হবে—যত প্রতিকূলতাই আসুক না কেন, ঐক্য ধরে রাখতে হবে।”

তিনি জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের সদস্যদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, “সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক ও ঐকমত্যের মাধ্যমে জুলাই জাতীয় সনদ তৈরি এবং বাস্তবায়নের রূপরেখা নির্ধারণ করা একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন।”

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “জুলাই জাতীয় সনদ আমাদের ঐতিহাসিক অর্জন। এটি জাতির এক মূল্যবান দলিল, যা শুধু আগামী জাতীয় নির্বাচনের পথ সুগম করবে না, বরং গণতন্ত্রকে সুসংহত করবে এবং জাতীয় রাজনীতির ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশক হিসেবে কাজ করবে।”

তিনি বলেন, “জনগণ প্রত্যাশায় আছে জাতীয় জীবনে এমন পরিবর্তন দেখার জন্য, যা বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির বিকাশ ঘটাবে—এমন পরিবর্তন যা এ দেশে আর কোনো স্বৈরাচারের পুনরাবৃত্তি ঘটতে দেবে না এবং নাগরিক অধিকার ও মর্যাদা রক্ষা করবে।”

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান বলেন, “সবচেয়ে আশার কথা হলো—আমরাই নিজেরা এই সংস্কার প্রক্রিয়া নিয়ে কাজ করেছি, একমত হয়েছি। বাইরের কেউ আমাদের ওপর কোনো সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়নি। অতীতে বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংলাপে বিদেশিদের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে দেখা গেছে, কিন্তু এবার তা হয়নি।”

ড. ইউনূস বলেন, “বন্ধু রাষ্ট্র ও জাতিসংঘের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে এক টেবিলে আনতে চেয়েছিলেন। তবে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে যে নিজেদের সংকট নিজেদেরই সমাধান করতে হবে। তাই সব দল এক কাতারে এসে রাজনৈতিক বিতর্কে অংশ নিয়ে সমাধানের পথ দেখিয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “বিশ্ববাসীকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট সমাধানে আহ্বান জানানোর পরিবর্তে আমরা নিজেরাই আমাদের জাতীয় ঐক্যকে তাদের সামনে তুলে ধরেছি।”

 

সব রাজনৈতিক দল ও নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “যারা এই সনদ তৈরিতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন, অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন, তাদের প্রতি আমি জাতির পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানাই।”

 

এমএ//

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন