ভার্জিনিয়ার প্রথম নারী গভর্নর অ্যাবিগেইল স্প্যানবার্গার
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যে অনুষ্ঠিত গভর্নর নির্বাচনে বড় জয় পেয়েছেন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী অ্যাবিগেইল স্প্যানবার্গার। রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বী উইনসাম আর্ল-সিয়ার্সকে পরাজিত করে তিনি নতুন গভর্নর হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন।
এনবিসি নিউজ জানিয়েছে, ভোটের হিসাব অনুযায়ী স্প্যানবার্গার পেয়েছেন ৫৬ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট, আর আর্ল-সিয়ার্স পেয়েছেন ৪৩ শতাংশ।
৪৭ বছর বয়সী সাবেক কংগ্রেসওম্যান ও প্রাক্তন সিআইএ কর্মকর্তা স্প্যানবার্গার তার প্রচারণায় অর্থনীতি, জননিরাপত্তা এবং নারীর প্রজনন অধিকারের বিষয়গুলোকে মূল ইস্যু হিসেবে সামনে রেখেছিলেন।
রিচমন্ডে বিজয় ভাষণে তিনি বলেন, ‘আজ ভার্জিনিয়া পক্ষপাতের বদলে বাস্তবতাকে, বিভাজনের বদলে ঐক্যকে বেছে নিয়েছে।’
বিশ্লেষকদের মতে, এই জয় ডেমোক্র্যাটিক পার্টির জন্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পরাজয়ের পর দলটি নতুন করে গতি ও জনআস্থা ফিরে পেতে চাচ্ছে, এবং স্প্যানবার্গারের এই জয় সেই প্রক্রিয়ায় বড় স্বস্তি এনে দিয়েছে।
অন্যদিকে রিপাবলিকান প্রার্থী আর্ল-সিয়ার্স বর্তমান গভর্নর গ্লেন ইয়ংকিনের নীতির ধারাবাহিকতা বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তবে প্রচারণায় তিনি কোনো সুস্পষ্ট বার্তা তুলে ধরতে পারেননি। ট্রাম্পের প্রতি তার প্রশংসা থাকলেও, সাবেক প্রেসিডেন্টের আনুষ্ঠানিক সমর্থন তিনি পাননি।
পরাজয় মেনে নিয়ে আর্ল-সিয়ার্স বলেন, ‘যদি স্প্যানবার্গার সত্যিই মধ্যপন্থায় শাসন করেন, তবে তিনি ভার্জিনিয়ার মানুষকে একত্র করবেন।’
২০১৮ সালে রিপাবলিকান অধ্যুষিত একটি আসন থেকে প্রথমবার কংগ্রেসে নির্বাচিত হয়েছিলেন স্প্যানবার্গার। এবারও তিনি মধ্যপন্থী ভাবমূর্তি ধরে রাখেন এবং ডেমোক্র্যাট দলের শীর্ষ নেতৃত্বের পূর্ণ সমর্থন পান। যদিও নির্বাচনের আগে দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও ফেডারেল সরকারের অচলাবস্থা তার প্রচারণায় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল, শেষ পর্যন্ত ভোটারদের আস্থা জয় করতে সক্ষম হন তিনি।
এক্সিট পোল অনুযায়ী, ভোটারদের অর্ধেকেরও বেশি অর্থনীতিকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হিসেবে বিবেচনা করেছেন—যাদের মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশই স্প্যানবার্গারকে ভোট দিয়েছেন। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে অসন্তুষ্ট অনেক ভোটারও তার পক্ষেই রায় দিয়েছেন।
একই দিনে ভার্জিনিয়ায় ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জে জোন্স অ্যাটর্নি জেনারেল এবং ঘাজালা হাশমি লেফটেন্যান্ট গভর্নর পদে জয়ী হওয়ায় রাজ্যে ডেমোক্র্যাটদের বিজয়ধারা আরও শক্ত হয়েছে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, গত ১২টি গভর্নর নির্বাচনের মধ্যে ১১ বার ভার্জিনিয়ার ভোটাররা হোয়াইট হাউসে ক্ষমতাসীন দলের বিপরীত দলের প্রার্থীকে বেছে নিয়েছেন। এবারের নির্বাচনে সেই ঐতিহাসিক ধারা আবারও বজায় থাকল।
এসি//