ঢাকার বাতাস আজ 'খুব অস্বাস্থ্যকর', বায়ুদূষণের তালিকায় তৃতীয়
বিশ্বের অনেক শহরের মতোই, ঢাকা আজ এক বিপজ্জনক বায়ুদূষণের কবলে। বিশেষ করে শীতের মৌসুমে দূষিত শহরের তালিকায় প্রায়ই শীর্ষস্থান ধরে রাখে এই মেগাসিটি। সম্প্রতি, ঢাকার বায়ু মান সূচক (একিউআই) ২৫৮ স্কোরে পৌঁছেছে, যা “খুব অস্বাস্থ্যকর” হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এই ভয়াবহ দূষণের ফলে শুধু পরিবেশই নয়, মানুষের স্বাস্থ্যের ওপরও মারাত্মক প্রভাব পড়ছে।
সোমবার (১০ নভেম্বর) সকাল ৮টা ১৮ মিনিটে বায়ুমানের সূচক অনুযায়ী, ঢাকার অবস্থান ছিল বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ দূষিত শহরের তালিকায়। একিউআই স্কোরের বিচারে, ৫৭৭ স্কোর নিয়ে ভারতের দিল্লি প্রথম এবং ৩৫৬ স্কোর নিয়ে পাকিস্তানের লাহোর দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। অন্যদিকে, কলকাতা ২২৪ স্কোর নিয়ে চতুর্থ স্থানে রয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ঢাকার বায়ুদূষণের অন্যতম কারণ হিসেবে দায়ী করা হচ্ছে ইটভাটা, যানবাহনের নির্গত ধোঁয়া, এবং নির্মাণ সাইটের ধুলো। এর পাশাপাশি, শহরের অনেক এলাকায় অবকাঠামোগত উন্নয়নকাজও অবাধে চলছে, যেখানে পরিবেশের প্রতি কোনো ধরনের সচেতনতা বা বিধি নিষেধ মানা হচ্ছে না। শহরের বায়ু দূষণের মূল উৎস হিসেবে একাধিক কারণে নির্মাণযজ্ঞের দিকে আঙুল তোলা হচ্ছে, যেখানে প্রায়ই আদর্শ মান মানা হয় না।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) মতে, বায়ুদূষণের ফলে সৃষ্ট স্বাস্থ্যঝুঁকি অত্যন্ত গুরুতর। বিশেষ করে শিশু, প্রবীণ, অসুস্থ ব্যক্তি এবং অন্তঃসত্ত্বাদের জন্য এটি এক মারাত্মক বিপদ। এমনকি, দীর্ঘমেয়াদী বায়ুদূষণের সংস্পর্শে আসা মানুষদের মধ্যে শ্বাসকষ্ট, হৃদরোগ, এবং ক্যান্সারের মতো জটিল রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
নগর পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান জানাচ্ছেন, ঢাকার বায়ুদূষণ পরিস্থিতি দিনদিন আরও উদ্বেগজনক হয়ে উঠছে। তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন যে, নির্মাণ কাজের সময় যদি সরকার ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলি যথাযথ পরিবেশবান্ধব নিয়ম মানত, তবে পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হতো।
এসি//