লাইফস্টাইল

বয়সের ছন্দে সুখ খুঁজে পাওয়ার ৫ রূপ

বয়সের সংখ্যাটি যত বাড়ে, অনেকেই মনে করেন জীবনের রং যেন একটু একটু করে ম্লান হয়ে যায়। আয়নার সামনে দাঁড়ালে বলিরেখা মনে করিয়ে দেয়—সময় বয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সত্যি কি বয়সই সব কিছুকে ফিকে করে দেয়?

আসলে জীবন তার সৌন্দর্য হারায় না কখনো; হারিয়ে ফেলি আমরাই—কৌতূহল, সম্পর্ক, আর মনখোলা আনন্দের চাবিটা। অথচ বয়স বাড়া মানেই নতুন আলো, গভীর বোঝাপড়া, আর অন্যরকম শান্তির দরজা খুলে যাওয়াও তো হতে পারে।

মার্কিন জেরিয়াট্রিশিয়ান ও লেখক ডা. কেরি বার্নাইট বলেন, বয়স যতই এগোক, সুখ ও পরিপূর্ণতার পথ ঠিক ততটাই উজ্জ্বল। শুধু জানতে হয় কোন অভ্যাসগুলো আপনাকে বয়সের সাথে সাথে আরও সুন্দর করবে।

তার সাজানো সেই পাঁচ পথই আজ তুলে ধরা হলো—আপনার জীবনের পরবর্তী অধ্যায়টাকে আরও সুখী, প্রাণবন্ত আর অর্থবহ করে তুলতে।

১. কৌতূহল বাঁচিয়ে রাখুন

জীবনের প্রতি বিস্ময় আর কৌতূহল কখনোই যেন না মরে।

ডা. বার্নাইট বলেন, কৌতূহলী মন থাকলে জীবন নিজেই প্রতিদিন নতুন কিছু উপহার দেয়। আপনি হঠাৎই শেখার আগ্রহে ভরে উঠবেন, নিজের ভেতরের উন্নতিটা টের পাবেন। নতুন কিছু শেখার যে আনন্দ—তা বয়সের সীমার বাইরে এক অদ্ভুত শক্তি এনে দেয়।

২. সম্পর্কের সুতো আঁকড়ে ধরুন

যে কোনো বয়সে মানুষ মানুষকেই টানে। বৃদ্ধ কেউ যখন বিষণ্ন হয়ে তার কাছে আসেন, ডা. বার্নাইট প্রথমেই জিজ্ঞেস করেন—আজ কার সঙ্গে কথা বলেছেন? কোন আলাপটা ভালো লেগেছে? মানুষ যখন অন্যকে ছুঁয়ে থাকে—কথায়, খোঁজখবর নেওয়ায়—তখনই তার জীবনে ফের আলো জ্বলে। বন্ধুত্বপূর্ণ, গভীর সম্পর্কের কোনো বিকল্প নেই।

৩. শিশুদের সঙ্গে থাকুন

শিশুরা যেন জীবনের ছোট্ট ডাক্তার—তাদের হাসি, তাদের স্পর্শ, তাদের প্রশ্ন—সবই মনকে হালকা করে দেয়। আর যদি তারা হয় নিজের নাতি–নাতনি, তাহলে সেই আনন্দ বহুগুণ বাড়ে। গবেষণায় দেখা গেছে, সপ্তাহে তিন দিন মাত্র দুই ঘণ্টা শিশুদের সঙ্গে সময় কাটালে আলঝেইমার্সসহ বার্ধক্যজনিত নানা মস্তিষ্কের রোগের ঝুঁকি প্রায় অর্ধেক কমে। শরীর-মন দুটোই থাকে চনমনে।

৪. পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলুন

পৃথিবী বদলাচ্ছে চোখের পলকে। বয়স বাড়লে অনেকে পুরোনো স্মৃতিতে আটকে যান, বর্তমানকে দূরে ঠেলে দেন। তখনই তিনি ধীরে ধীরে অন্যের কাছে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েন।তাই বয়স যাই হোক—বর্তমানেই বাঁচুন, নতুনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিন। তাতে নিজেকে সক্রিয়, দরকারি আর প্রাণবন্ত মনে হবে।

৫. ছোট হলেও প্রতিদিন অন্যকে কিছু উপহার দিন

অন্যের জন্য কিছু করার মধ্যেই লুকিয়ে আছে নিজের শান্তি। প্রতিদিন কিছু না কিছু অবদান রাখুন—হতে পারে পরামর্শ, সাহায্য, ঘরের কোনো দায়িত্ব, বাজার করা, কিংবা শুধু মন দিয়ে অন্যের কথা শোনা। অনেক সময় শুধু দুটো নরম কথা বা একটু পাশে থাকা—এটাই অন্যের জন্য বিশাল উপহার হয়ে যায়। ‘গিভিং’ মানসিকতা মানুষকে শুধু প্রিয়ই করে তোলে না—নিজেকেও ভরিয়ে দেয় গভীর তৃপ্তিতে।

বয়স বাড়া মানে থেমে যাওয়া নয়—বরং আরও আলোকিত হওয়া।

যদি কৌতূহল, সম্পর্ক, ভালোবাসা আর মন খোলা রাখেন—আপনার প্রতিটি দিনই হতে পারে আরও সুখী, আরও পরিপূর্ণ।

 

সূত্র: দ্য টাইমস

এসি//

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন