কম্বোডিয়ায় থাইল্যান্ডের বিমান হামলা, শঙ্কায় ট্রাম্পের শান্তিচুক্তি
থাইল্যান্ড–কম্বোডিয়া সীমান্তে নতুন করে তৈরি হওয়া উত্তেজনার কারণে প্রতিবেশী কম্বোডিয়ার অভ্যন্তরে বিমান হামলা চালিয়েছে থাইল্যান্ড। সোমবার (০৮ ডিসেম্বর) ভোরে চং এন মা পাস এলাকার ভেতরে কম্বোডীয় সেনাবাহিনীর একটি অস্ত্রাগার লক্ষ্য করে এ হামলা পরিচালনা করে থাই প্রতিরক্ষা বাহিনী।
থাইল্যান্ডের সেনাবাহিনীর আন্তঃবিভাগ সংযোগ দপ্তর–আইএসপিআর–এর প্রধান মেজর জেনারেল উইনথাই সুভারি এক বিবৃতিতে জানান, হামলার লক্ষ্য ছিল কম্বোডীয় সেনাদের আর্টিলারি ও মর্টার মজুতকেন্দ্র। ব্যাংককের দাবি, এসব অস্ত্র থাই সেনা ও সাধারণ নাগরিকদের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, রোববার কম্বোডীয় বাহিনীর হামলায় একজন থাই সেনা নিহত এবং দু’জন আহত হওয়ার প্রতিশোধ হিসেবেই এই বিমান হামলা চালানো হয়েছে।
অন্যদিকে কম্বোডীয় সেনা সদরদফতরের আইএসপিআর এক পৃথক বিবৃতিতে বলেছে, স্থানীয় সময় ভোর ৫টা ৪ মিনিটে থাই বিমান বাহিনী তাদের সেনা স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয় গত কয়েকদিন ধরে থাই বাহিনী ধারাবাহিক উসকানিমূলক তৎপরতা চালাচ্ছে, আর সোমবারের হামলাও সেই ধারাবাহিকতার অংশ।
এ হামলায় কম্বোডিয়ার কী ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। রোববার দুপুর ২টা ১৫ মিনিটে সি সা কেত প্রদেশের থাই সীমান্ত লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে কম্বোডীয় সেনাবাহিনী। এতে দু’জন থাই সেনা আহত হন। এরপর পাল্টা গুলি চালায় থাইল্যান্ড। প্রায় ৩৫ মিনিট স্থায়ী হয় সংঘাত।
পরে উত্তেজনা বাড়লে সীমান্তবর্তী থাইল্যান্ডের চার প্রদেশ—বুরি রাম, সুরিন, সি সা কেত ও উবন রাতচাথানি—থেকে হাজার হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয় থাই কর্তৃপক্ষ। সিএনএনের তথ্য অনুযায়ী, সীমান্তের কাছাকাছি বসবাসকারী প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
রোববারই থাইল্যান্ড জাতিসংঘে অভিযোগ জানায়, কম্বোডিয়া গোপনে বড় এলাকা জুড়ে থাই ভূখণ্ডে ল্যান্ডমাইন পুঁতে রেখেছে, যেগুলোর বিস্ফোরণে থাই ও চীনা নাগরিক আহত হয়েছেন। বিষয়টি তদন্তের জন্য জাতিসংঘকে আহ্বান জানিয়েছিল ব্যাংকক।
অল্প সময় পরই সি সা কেত সীমান্তে নতুন সংঘাত শুরু হয় দু’দেশের সেনাদের মধ্যে।
সীমান্ত-ইস্যুকে কেন্দ্র করে দীর্ঘ ১৫ বছরের যুদ্ধবিরতি ভেঙে গত জুলাইয়ে সংঘাতে জড়িয়েছিল থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া। টানা পাঁচ দিনের সংঘাতে ৩২ জন নিহত এবং কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছিলেন। বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন দুই লাখের বেশি মানুষ।
পরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের হস্তক্ষেপে যুদ্ধবিরতি শুরু হলেও রোববারের সংঘাত সেই শান্তি-সমঝোতাকে নতুন করে হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে।
এসি//