রাজধানী

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যার মূল আসামি গ্রেপ্তার

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা ও মেয়েকে নৃশংস হত্যার ঘটনায় মূল আসামি আয়েশাকে গ্রেপ্তার করেছে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ। 

বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে পুলিশের একটি সূত্র থেকে জানা যায় বরিশালের ঝালকাঠি জেলার নলছিটি এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার ওসি মেজবাহ উদ্দিন।

তিনি জানান, এই ডাবল মার্ডারের ঘটনায় গৃহকর্মী আয়েশাকে একমাত্র আসামি করে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করা হয়েছে।

অভিযুক্ত গৃহকর্মী ওই বাসায় কাজ নেয়ার সময় তার নাম 'আয়েশা' বলে জানিয়েছিলেন। তবে এটা তার প্রকৃত নাম নয় এবং তিনি সঠিক ঠিকানাও দেননি। ঘটনার সময় ওই গৃহকর্মীর সঙ্গে কোনো মোবাইল ফোন ছিল না। ফলে প্রযুক্তির সহায়তায় অবস্থান শনাক্ত করা যাচ্ছিল না বলে গণমাধ্যমকে জানান মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) আবদুল্লাহ আল মামুন। 

এ ছাড়া আশপাশের এলাকার সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো অচল থাকায় তিনি কোন দিকে পালিয়েছেন, তা নিশ্চিত হওয়াও কঠিন হয়ে পড়েছে বলে জানায় পুলিশ।

নৃশংস এ হত্যার চার দিন আগে লায়লা আফরোজের বাসায় গৃহকর্মীর কাজ শুরু করেন ওই নারী। প্রতিদিনই তিনি বোরকা পরে বা মুখমণ্ডল ঢেকে আসাযাওয়া করতেন। ফলে ভবনের সিসিটিভি ক্যামেরায় তার মুখ ধরা পড়েনি। নিহত লায়লা আফরোজ ও তার কিশোরী মেয়ে নাফিসা ছাড়া আর কেউ তার চেহারা দেখেনি। তাই তার নাম–পরিচয়সহ কোনো ব্যক্তিগত তথ্য উদ্ধার সম্ভব হয়নি।

সোমবার (০৮ ডিসেম্বর) সকাল ৭টায় কর্মস্থল উত্তরায় যান লায়লার স্বামী আজিজুল ইসলাম, যিনি পেশায় শিক্ষক। কর্মস্থলে পৌঁছে স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন তিনি। পরে সকাল ১১টার দিকে বাসায় ফিরে দেখেন, স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) বাসার ভেতরে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে।

বাসার প্রধান ফটকের কাছে মেয়ে নাফিসা নাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫)–কে গুরুতর জখম অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। দ্রুত হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঘটনার পর সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে আজিজুল ইসলাম দেখতে পান। গৃহকর্মী সকাল ৭টা ৫১ মিনিটে বাসায় প্রবেশ করেন এবং ৯টা ৩৫ মিনিটে তার মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে বেরিয়ে যান। বের হওয়ার সময় তিনি একটি মুঠোফোন, ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার ও নগদ অর্থসহ বিভিন্ন মালামাল নিয়ে যান।

এই ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয় ওই নারীকে একমাত্র আসামি করে সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় হত্যা মামলা করেন আজিজুল ইসলাম।

পুলিশ জানায়, ঘটনার পর ভবনের এক নিরাপত্তাকর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছিল। তিনি জানান, চার দিন আগে এক নারী কাজের খোঁজে ভবনের সামনে এলে লায়লা আফরোজের পরিবারের অনুরোধে তাকে বাসায় নিয়ে যান। তবে ওই নারীর সঙ্গে তার পূর্ব পরিচয় ছিল না।

 

এসি//

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন